মুজিবনগর সরকারের কার্যক্রম

মুজিবনগর সরকারের ছিল ১২ টি মন্ত্রণালয়, এ সকল মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায় মুজিবনগর সরকারের ক্যাবিনেট সচিব হোসেন তৌফিক ইমাম এর ‘বাংলাদেশ সরকার ১৯৭১’ গ্রন্থ হতে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, প্রধান সেনাপতি ছিলেন কর্নেল আতাউল গনি ওসমানী, সেনাপ্রধান ছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুর রব, উপপ্রধান ও বিমান বাহিনী প্রধান ছিলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন একে খন্দকার। বাংলাদেশের সমস্ত মুক্তাঞ্চল কে এপ্রিলে চারটি (নাকি ৫টি 😕 ) ভাগে ভাগ করা হয়। পরের দিন ১১ এপ্রিল তা সংশোধন করে ১১ টি সেক্টরে ভাগ করা হয়। বাংলাদেশকে এগারটি প্রশাসনিক অঞ্চল বিভক্ত করে সংশ্লিষ্ট এলাকার সংসদ সদস্য বা আওয়ামী লীগ নেতাদের অঞ্চলগুলোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ সময় তিনটি ব্রিগেড গঠিত হয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেই সার্বিক মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশে মিশন স্থাপন ও বিদেশে কূটনৈতিক তৎপরতা পরিচালনা করে। অর্থ শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মুজিবনগর সরকারের পূর্ণাঙ্গ বাজেট প্রণয়ন করে। মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে চারটি রেঞ্জের জন্য চারজন ডিআইজি ও প্রতি জেলার জন্য একজন এসপি নিয়োগ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মুক্তিযুদ্ধকালীন জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তাজউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ৯ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল থেকে ১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত মুজিবনগর সরকারের কার্যকাল ছিল।

মুজিবনগর সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী কে বহির্বিশ্বে বিশেষ দূত নিয়োগ করে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে বহির্বিশ্বের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করে। মে মাসের প্রথম দিকে শেখ মুজিবুর রহমানের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক রেহমান সোবহান সরকারের নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রে যান। তিনি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ সরকারের প্রথম প্রতিনিধি। তার প্রচেষ্টায় জুন মাসে বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করেন। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে দাতাগোষ্ঠী পাকিস্তানকে নতুন সাহায্য দানে বিরত থাকে এবং ঋণ রেয়াত দিতেও আপত্তি জানায়।

Add a Comment