আমি তপু (বুক রিভিউ)
|বইয়ের নাম: আমি তপু
লেখক: মুহম্মদ জাফর ইকবাল
রিভিউ: সাকের আরিফ
মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১২৩
প্রকাশক: পার্ল পাবলিকেশন্স
প্রথম প্রকাশকাল: একুশে বইমেলা ২০০৫
মুদ্রিত মূল্য: ১৫০ টাকা
ব্যক্তিগত রেটিং: ০৮/১০
আমি শুধু বইটি সম্পর্কে কাহিনী সংক্ষেপ আলোচনা ও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবো।
কাহিনী সংক্ষেপ: গল্পের নায়ক তপু যার পুরো নাম আরিফুল ইসলাম তপু। যার পরিবার ছিলো অনেক সচ্ছল। তার পরিবারে ছিলো বাবা মা ভাই বোন ও একজন কাজের বুয়া। গল্পের শুরুতে তপুর জীবন ছিলো অনেক সম্ভবনাময়ী। সে ডিবেট করতো, ডিবেট করে সে পুরষ্কার অর্জন করে। মোটামুটি ভাবে তার জ্ঞান নিয়ে চারদিকে প্রশংসিত হতে থাকে। গল্পের প্লটে একসময়ে তার বাবা মারা যায় রোড এক্সিডেন্টে। সাথে ছিলো তপু, ভাগ্যক্রমে তপু বেঁচে যায়। তপুর বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে তপুর মা তপু কে আর দেখত পারেন না। তার উপর বিভিন্ন অত্যাচার হতে শুরু করে তপুর মা। তপুর মা তপুকে তার চোখের সামনে সহ্য করতে পারতো না। তপুকে অন্যান্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হয়। তপুদের কাজের বুয়া তপুকে অনেক ভালোবাসে। তাকে লুকিয়ে অনেক সময় টাকা দিতো। আর অন্যদিকে তপুর অন্য দুই ভাইবোন সব ধরণের সুজোগ পেতো এবং আদর সোহাগেরও কমতি ছিলো না। শেষমেষ তপুর জায়গা হয় রান্না ঘরে। সেখানে তার সাথী হয় একটি ইঁদুরের সাথে। যার নাম ছিলো ‘নিমকি‘। এভাবে কাটতে থাকে তপুর দিনকাল। একসময় সে ভাবে পালিয়ে যাবে সে আর এই বদ্ধ সংসারে থাকতে চায় না। ঘটনার পরাক্রমে স্কুলের এক মেয়ের সাথে পরিচয় হয়। মেয়েটির নাম প্রিয়াংকা। মেয়েটি তার একসময় অনেক ভালো বন্ধু হয়ে যায়। তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় এই মেয়েটি। তপু অংকে ছিলো অনেক ভালো যা অন্য কেউ কখনো কল্পনাও করতে পারেনি। যেটা এই মেয়েটি আবিষ্কার করেছিলো। শেষমেষ মেয়েটির কারণে তপু গণিত অলিম্পয়াডে অংশগ্রহণ করে। এবং তপু চ্যাম্পিয়নদের চ্যাম্পিয়ান হয়। সবাই খুশি হয় টেলিভিশন পত্রিকায় সব জায়গায় তপুর ছবি। সবাই খুশি হলেও তপুর পরিবার ছিলো বিমর্ষ। তপুর এই বিশাল ফলাফলেও যেন কেউ খুশি নয়। গল্পের শেষের দিকে তপুর মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ধরা পড়ে তপুর মায়ের মাথার ভিতর বিশাল টিউমার। চিকিৎসা করালেও ডক্টররা কোনো ভরসা দিতে পারছেন না। একদিকে তপু কোনোদিন তার মায়ের সামনে যেতে পারেনি। হাসপাতালে গিয়েও তপু সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলেন দেখা করবে কি করবেনা। শেষে এক ডাক্তার চিনতে পেরে তাকে তার মায়ের সামনে নিয়ে গেলো। মায়ের মাথায় অপরাশেনের যন্ত্রপাতি, নাকের নলে পাইপ। তপু কাছে গিয়ে মাকে ডাকলো বললো আমি তপু। প্রায় তিন বছর পর তপু তপুর মায়ের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। মা তাকিয়ে তপুকে অস্পষ্ট ভাষায় বললো তপু তোকে আমি অনেক অত্যাচার করেছি আমাকে ক্ষমা করে দিস। তোর বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে আমার মাথাটায় কি যে হয়েছে। কিছু বলতে পারিনা। তপু বললো না মা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি কখনো তোমার উপর আমি অভিমান করিনি। তোমার আগের যত্ন আদরকে সবসময় সাথে রেখেছি। তপুর মা সাথে সাথে তপুকে বুকে টেনে নিলো সেখানেই তপুর মা মৃত্যুবরণ করলো। হাসপাতালে তপু আর তপুর মা অদূরে শুধু দাঁড়িয়ে ছিলো প্রিয়াংকা।
প্রতিক্রিয়া: গল্পটি পড়ে চোখের পানি আটকাতে খুব কষ্ট হয়েছে। মায়ের ভালোবাসা আশপাশের পরিবেশের মানুষদের থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।
কিছু শিক্ষাঃ
★কখনো ভেঙ্গে পড়তে নেয়।
★যার যার সুপ্ত অবস্থা ফুঁটিয়ে তুলতে হবে।
★জীবনে চলার পথে কেউ একজন তোমার উদ্দীপনা হিসেবে কাজ করুক এমন একজনকে বেছে নাও।
★মাকে ভালোবাসো সে শত হলেও তোমাকেই ভালোবাসবে।
ঘুচিয়ে লিখতে পারিনি হয়ত, তবে বলবো যে বইটি পড়তে