প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নিয়ে কিছু কথা

By —- Aryan Ahmed
Assistant Commissioner of taxes

আগামী কালকের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নিয়ে অনেকেরই মাথা গরম হয়ে আছে এবং অনেকের মাথা কেন্দ্রে যাওয়ার আগে ঘড়ির কাটার বিপরীত দিকে ঘুরতে থাকে । অনেকেই আবার পরীক্ষা কেন্দ্র কে কেন্দ্র করে ১০০ মিটার ব্যাসার্ধ এর একটি ভয়ের বলয় কেন্দ্রে যাওয়ার আগেই নিজের মনের মাঝে তৈরী করে নিয়ে যায় । যে যত নার্ভাস থাকবে তার এক্সাম তত খারাপ হবার সম্ভাবনা বাড়বে, একথা বহুবার বলেছি, এসব এক্সামে প্রস্তুতির চেয়ে এক্সাম হলে নিজের performance টা বেশি গুরুত্বপূর্ণ । বেশিরভাগ student রা শুধু নিজেদের মাঝে competition এর চিন্তা করে, ফলে কোন competitive exam দিতে গিয়ে শুধু সংখ্যা গুনে, মানে কতজন এক্সাম দিচ্ছে কতজন নিবে এসব । এভাবে চিন্তা করলে নার্ভাস তো লাগবেই । যে কোন এক্সাম নিয়ে প্রথম যা জানা উচিত – সেই পরীক্ষায় বিগত বছরগুলোতে সাধারণত কত নাম্বার পেলে চান্স হয়েছে বা ভালো কিছু হয়েছে, বা সাধারণত কত পেলে সফল হওয়া যায় এবং কি টাইপ প্রশ্নে কত নাম্বারে চান্স হয়েছে?? তারপর নিজের উচিত হবে উক্ত পরীক্ষায় যত নাম্বার পেলে সফল হওয়া যায় তত নাম্বার পাওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করা । এটাও প্লান করতে পারেন যে ওই পরীক্ষার বিভিন্ন বিষয়ে আনুমানিক বা সম্ভাব্য কত নাম্বার পাওয়ার চেষ্টা করবেন, জাস্ট একটা idea নিয়ে যাবেন, লাখ লাখ student পরীক্ষা দিলে আপনার কি?
আপনি মোটামুটি সেই নাম্বার তোলার চেষ্টা করুন, দেখবেন পরীক্ষাতে সফল হওয়া আপনার জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে । যেমন বিসিএস লিখিত পরীক্ষার জন্য ৫৫০ প্লাস নাম্বার ভালো নাম্বার, প্রিলি পরীক্ষার জন্য ৫৫%-৬০% নাম্বার ভালো নাম্বার । তবে এটা প্রশ্নের ধরনের ওপর নির্ভর করে। কি টাইপ প্রশ্নে সাধারণত কত % নাম্বার পেলে সফল হওয়া যায় এটা বুঝতে পারলে সেই পরীক্ষাতে ভালো করাটা অনেকটা সহজ হয় ।

প্রশ্ন নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে অনেকবার বলেছি আপনাদের, আশা করি অনেকেই করেছেন, পরীক্ষাতে সব প্রশ্ন পারাও লাগেনা আবার সবকিছু পড়াও লাগেনা । যারা চালাক তারা প্রশ্ন ঘাটাঘাটি করলেই মোটামুটি বুঝে যায় কি পড়তে হবে আর কিভাবে পড়তে হবে । বিসিএস প্রিলির জন্য যারা সিরিয়াসলি প্রস্তুতি নেয় তাদের কারোই খারাপ প্রস্তুতি থাকেনা, পরীক্ষার হলে গিয়েই ডুবায় অনেকেই ।
এটা কাল যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন । নিজে যা পড়েছেন সেটি একটি ভাল পরীক্ষা দেয়ার জন্য যথেষ্ট, সেটা কাজে লাগান । আগামীকাল এর পরীক্ষার জন্য যা করতে পারেন ——

১- পারলে একটু সকাল সকাল বের হয়ে যাবেন, জ্যামের মাঝে বসে থেকে বা নিজের আসন খুঁজতে গিয়ে যেন থ্রিলিং experience না নিতে হয়, অনেককে দেখেছি পরীক্ষা শুরু হবার পর হাপাতে হাপাতে ঘেমে পরীক্ষার হলে প্রবেশ ককরছে যেন এইমাত্র ২০০ মিটার রিলেতে অংশ নিয়েছেন, এমন হলে তো শুরুতেই আপনার মুডটা নষ্ট হোল, তাইনা? আজকে বেশি রাত জাগবেন না, এই এক রাতের রাতজাগা পড়া আপনার মাথা গরম করা ছাড়া আর কিছুই করবে না । আর পারলে পরীক্ষা দেয়ার আগ পর্যন্ত নানান জনের সাথে মোবাইলে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন । আজকে আর বেশি কিছু পড়ার দরকার নেই, যা হবার হয়েছে, আর ২-৩ ঘণ্টা যা দেখতে মন চায় দেখে ঘুমিয়ে যান ।

২ – সকালে অবশ্যই কিছু খেয়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে যাবেন, না খেয়ে গেলে অনেক সময় খারাপ লাগতে পারে । পারলে সকালে খাওয়ার আগে cap seclo 20mg or cap sergel 20mg এমন যেকোন এসিডিটির ঔষধ খেয়ে নিন, অনেক সময় টেনশনে এসিডিটি হয় ।

৩ – পরীক্ষার কেন্দ্রে গিয়ে কারোও সাথে কোন কথা না বলাই ভালো, কে কেমন প্রস্তুতি নিয়েছে,কে কেমন পড়াশোনা করেছে এসব জেনে কি লাভ তাইনা? নিজের মত পরীক্ষা দিবেন । নানান জনের নানান উলটাপালটা কথায় নার্ভাস হবার সম্ভাবনা বাড়ে।

৪ – উত্তরপত্র ভালমতো সাবধানে পূরণ করবেন, অযথা তাড়াহুড়ো করবেন না, যথেষ্ট সময় পাবেন আপনি, কাল আপনার মিশন হচ্ছে একটানা শুধু জানা ও পারার মত প্রশ্নগুলো উত্তর করে আসা । প্রশ্নে কি চেয়েছে সেটি ভালোমত পড়বেন, যা উত্তর করবেন correct করার চেষ্টা করবেন, বৃত্ত পূরণে যেন কোন ভুল না হয় সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখবেন । একটানা পারার মত প্রশ্নগুলো উত্তর করার পর সময় পেলে অন্যগুলো নিয়ে পরে চেষ্টা করবেন । শুরুতে কঠিন, বড়, জটিল ও না পারার মত প্রশ্ন এবং বড় ও জটিল গনিতগুলো বাদ দিয়ে অন্যগুলো উত্তর করুন, ঝামেলাপূর্ণ প্রশ্ন এড়িয়ে যান, আপনার প্রশ্ন চয়েসের ওপর নির্ভর করবে আপনার পরীক্ষা কেমন হবে ।

৫ – নিজে যা পারবেন নিজের যা সঠিক মনে হবে উত্তর করার চেষ্টা করবেন, পাশের জনের উপর নির্ভর না করাই ভালো, অনেক সময়ই দেখবেন আপনার পাশের জনকে যাই জিজ্ঞেস করছেন এক চান্সেই বলে দিচ্ছে, আসলে আন্দাজি বলছে, মনের মাধুরী মিশিয়ে বলছে,পাড়তপক্ষে কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করতে যাবেন না ।

৬ – নিজের লোভকে সংবরণ করবেন, বেশি খাওয়ার দরকার নেই, অনুমানে বেশি দাগাতে যাবেন না, প্রিলির নাম্বার বেশি পাওয়া বা কম পাওয়া দুইই একই । আপনার টেকা দিয়ে কথা । আর যারা almost না পড়েই এমনিই পরীক্ষা দিতে যাবেন এবং গিয়ে দেখবেন বেশির ভাগ প্রশ্নই পাড়ছেন না, আপনাদের জন্য থিউরি হচ্ছে no risk, no gain, মানে অনুমানের ওপর ভিত্তি করে যত বেশি পাড়ুন উত্তর করুন ।

৭ – শুধু এলার্ম ঘড়ির ওপর নির্ভর করলে হবেনা, পারলে কাউকে বলে রাখবেন যেন সকালে আপনাকে ডেকে দেয় ( যাদের দরকার তাদের বললাম) ।

৮ – কোন কিছু না পারলে মাথা গরম করতে যাবেন না, পরবর্তী প্রশ্নে চলে যাবেন । কাল সকালে পান্ডুলিপি নিয়ে ধ্যান করতে করতে পরীক্ষার হলে যাওয়ার কোন দরকার নেই, যা পড়া আজই, কাল একটা ফ্রেশ ঘুম দিয়ে ঠান্ডা মাথায় পরীক্ষা দিতে চলে যাবেন, প্রতিবার ই কিছু typical সহজ প্রশ্ন আসে, atypical গুলো avoid করবেন । দেখবেন পরীক্ষা ভালোই হবে । কি আর বলবো, এইই, slowly and smoothly উত্তর করবেন, কোথায় যেন পড়েছিলাম slow is smooth and smooth is faster, all the best, good luck guys.

বি দ্র — লিখায় কোন ভুল হলে……………… ।

Add a Comment