জিএসপি-প্লাসের জন্য প্রস্তুত নয় বাংলাদেশ*
|প্রথম আলো, কূটনৈতিক প্রতিবেদক ০৭ অক্টোবর ২০১৬
বাংলাদেশ ২০২১ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোতে অগ্রাধিকারমূলক বাজারসুবিধা (জিএসপি) হারাবে। তবে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উন্নীত হওয়ার পর বিশেষায়িত বাজারসুবিধা ‘জিএসপি প্লাস’ কর্মসূচির জন্য বাংলাদেশ আবেদন জানাতে পারে। এই সুবিধা পেতে হলে বাংলাদেশকে অন্তত ২৭টি আন্তর্জাতিক সনদ সই ও অনুসমর্থন করতে হবে, যার প্রস্তুতি এখনো নেওয়া হয়নি।
ঢাকায় ইইউর রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদু গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস-বিস) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
বিস আয়োজিত সংলাপ অনুষ্ঠানে তিনি বক্তৃতা করেন এবং সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিসের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মুন্সি ফয়েজ আহমেদ।
পিয়েরে মায়াদু বলেন, যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাওয়ার (ব্রেক্সিট) ফলে বাংলাদেশের ওপর তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রভাব না-ও পড়তে পারে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইউরোপের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজারসুবিধা পায়। ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তটি কার্যকর হওয়ার পর ‘বিকল্প কোনো ব্যবস্থা’ না থাকলে বাংলাদেশ এ সুবিধা পাবে না।
তিনি জানান, জিএসপি প্লাস কর্মসূচির জন্য একটি দেশকে মানবাধিকার, সুশাসন, শ্রমিক অধিকার, পরিবেশসহ বিভিন্ন বিষয়ে ২৭টি সনদ সই ও অনুসমর্থনের বিধান রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বাংলাদেশ বা অন্য কোনো স্বল্পোন্নত দেশ এই ২৭টি কনভেনশনে অনুস্বাক্ষর করেনি।
পিয়েরে মায়াদু বলেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী আগামী মার্চে ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন এবং এর পরপরই পাউন্ডের দাম কমে গেছে। এর মানে (পাউন্ডের দরপতন) হলো ইইউ ছেড়ে যাওয়ার চেয়ে একসঙ্গে থাকলেই যুক্তরাজ্যের লাভ বেশি।
ইইউ সদস্যদেশগুলোর মধ্যে জার্মানির পরে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সবচেয়ে বেশি এবং সেখানে প্রায় পাঁচ লাখ বাংলাদেশি আছেন।
গত জুনে যুক্তরাজ্যের জনগণ ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ার পক্ষে গণভোটে রায় দেন।
নিরাপত্তা নিয়ে: নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে এক প্রশ্নের উত্তরে পিয়েরে মায়াদু বলেন, গুলশানের রেস্তোরাঁর জঙ্গি হামলার পর নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুযায়ী এ জন্য সময় দরকার।
ইইউ রাষ্ট্রদূত জানান, গত বুধবার ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হকের এক আলোচনা সভায় অনেক রাষ্ট্রদূত অংশ নেন। ওই আলোচনায় নিরাপত্তাব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে বলে রাষ্ট্রদূতেরা উল্লেখ করেন।