বিচারকদের নিয়োগ
|এক এক দেশে এক একভাবে বিচারকদের নিয়োগ করা হয়। তবে বিচারক নিয়োগের সর্বজনীন পদ্ধতিও আছে। নিচে বিচারক নিয়োগের পদ্ধতিগুলো আলোচনা করা হল।
(ক) জনসাধারণের ভোটে নির্বাচিত: কোনো কোনো দেশে বিচারকগণ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যের আদালতের বিচারকগণ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন। এতে স্বাধীন, দৃঢ়চেতা ও জ্ঞানী-গুণী বিচারক নিয়োগ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা খুব একটা গ্রহণযোগ্য নয়।
(খ) আইনসভার ভোটে নির্বাচিত: কোনো কোনো রাষ্ট্রে আইনসভার সদস্যদের ভোটে বিচারক নিয়োগ করা হয়। যেমন- সুইজারল্যান্ডে আইনসভা বিচারক নিয়োগ করে। এই পদ্ধতিতে বিচারকদের যোগ্যতা অপেক্ষা রাজনৈতিক বিবেচনা বড় হয়ে দেখা দিতে পারে। তাছাড়া এতে বিচারকদের নিরপেক্ষতার অভাব ঘটার সম্ভাবনাই বিশি।
(গ) রাষ্ট্রধান কর্তৃক নিয়োগ: বিচারকমণ্ডলীর স্থায়ী কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপ্রধান কর্তৃক বিচারক নিয়োগ করার পদ্ধতিটি সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য। কারণ এভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারকগণ যোগ্য, দক্ষ, নির্ভীক ও নিরপেক্ষ হতে পারেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান বিচারকদের নিয়োগ করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিমকোর্টের বিচারকগণ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগ লাভ করেন। এই পদ্ধতিটি সর্বজনীন পদ্ধতি হিসেবে বিশ্বের অধিকাংশ দেশে প্রচলিত আছে।
বাংলাদেশে বিচারপতি নিয়োগ
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি তথা সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত করেন। প্রধান বিচারপতির সাথে পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের দুই বিভাগের- আপীল বিভাগ ও হাইকোর্টের বিচারপতিদের নিয়োগ দেন। প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারপতিগণ বিচার পরিচালনার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হতে হলে তাকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে কমপক্ষে ১০ বছর এডভোকেট হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে অথবা বাংলাদেশে বিচার বিভাগীয় পদে ১০ বছর বিচারক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
বিচারকের পদের মেয়াদ, পদত্যাগ, অপসারণ
সুপ্রিম কোর্টের বিচারকগণ ৬৭ বছর পর্যন্ত স্বীয় পদে কর্মরত থাকতে পারেন।