পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি
|টিকা লিখুনঃ পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি (২৯তম বিসিএস লিখিত)
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি, ১৯৯৭ বাংলাদেশ সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। (১৯, ২১তম বিসিএস প্রিলিমিনারি)
বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের প্রাক্কালে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার নেতৃত্বে পাহাড়ি জনগণের একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন এবং সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত পরিচিতির স্বীকৃতি সম্পর্কিত কতিপয় দাবি পেশ করেন। পাহাড়ি জনগণের দাবি মেনে নিতে সরকারের ব্যর্থতার ফলে তাদের স্বার্থ রক্ষার লক্ষ্যে ১৯৭৩ সালের মার্চ মাসে লারমার নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি নামে একটি রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে ওঠে। পরবর্তী সময়ে এর সঙ্গে যোগ হয় শান্তি বাহিনী নামে একটি সামরিক শাখা।
এরপর শান্তি বাহিনি ও ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাঝে চলতে থাকে রক্তক্ষয়ী সংঘাত। অবশেষে অনেক আলাপ আলোচনার পর পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিদের প্রতিনিধি জনসংহতি সমিতির সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২ ডিসেম্বর এই চুক্তি স্বাক্ষর করে। এতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং শান্তি বাহিনীর পক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতা সন্তু লারমা। এরপর ধীরে ধীরে উপজাতি-বাঙ্গালী সংঘর্ষ হ্রাস পায়।
এ চুক্তির প্রধান শর্তগুলো-
- পার্বত্য চট্টগ্রামকে উপজাতি উধ্যুষিত এলাকা বলে গণ্য করতে হবে।
- বিডিআর ও স্থায়ী সেনাবাহিনী ব্যতিত সকল সামরিক বাহিনী, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সকল অস্থায়ী প্রত্যাহার করা।
- সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সকল স্তরে উপজাতিদের নিয়োগে অগ্রাধিকার প্রদান।
- পাবর্ত্য জেলা স্থানীয় পরিষদের নাম হবে পার্বত্য জেলা পরিষদ।
- পরিষদের সাথে আলোচনা ছাড়া সরকার কোন জমি, পাহার, বনাঞ্চল অধিগ্রহণ বা হস্তান্তর করতে পারবে না।