পর্তুগীজদের আগমন
|পর্তুগীজদের মধ্যে যে দুঃসাহসী নাবিক প্রথম সমুদ্রপথে এদেশে আসেন তাঁর নাম ভাস্কো-ডা-গামা। তিনি ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দে ২৭ মে ভারতের পশ্চিম-উপকূলের কালিকট বন্দরে এসে উপসি’ত হন। তাঁর এ উপমহাদেশে আগমন ব্যবসা- বাণিজ্য এবং যোগাযোগ ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা করে।
১৪৯৮ সালের ২৭ মে পর্তুগিজ দুঃসাহসিক নাবিক ভাস্কো-দা-গামা উত্তমাশা অন্তরীপ অতিক্রম করে তিনটি বাণিজ্য তরী নিয়ে ভারতের পশ্চিম উপকূলে কালিকট বন্দরে আগমন করেন। তারা ১৫১৬ সালে প্রথম বাংলায় আসে। স্বল্প সময়ের মধ্যে এই ইউরোপীয় বণিকরা ১৫৩৮ সালে চট্টগ্রাম ও সাতগাঁওয়ে শুল্ক ঘাঁটি নির্মাণের অনুমতিও লাভ করে। অর্থাৎ বাংলায় ইউরোপীয় বণিকদের মধ্যে পর্তুগিজরা প্রথম আগমন করে। (40তম বিসিএস প্রিলিমিনারি) ওলন্দাজ বা ডাচরা বাংলায় আসে ১৬৩০ সালে। ইংরেজরা আসে ১৬৫৮ সালে এবং সবশেষে ১৬৭৪ সালে বাংলায় আগমন করে ফরাসিরা।
পর্তুগীজরা ব্যবসা-বাণিজ্যকে মূলধন করে এদেশে আসলে ক্রমে ক্রমে তারা সাম্রাজ্য বিস্তারের দিকে ঝুঁকে পড়ে। স্বল্প সময়ের মধ্যে এই ইউরোপীয় বণিকরা উপমহাদেশের পশ্চিম উপকূলের কালিকট, চৌল, বোম্বাই, সালসেটি, বেসিন, কোচিন, গোয়া, দমন, দিউ প্রভৃতি বন্দরে কুঠি স্থাপন করতে সক্ষম হয়। ১৫৩৮ খ্রিস্টাব্দে তারা চট্টগ্রাম ও সাতগাঁওয়ে শুল্কঘাঁটি নির্মাণের অনুমতি লাভ করে। ১৫৭৯ খ্রিস্টাব্দে হুগলী নামক স্থানে তারা উপনিবেশ গড়ে তোলে। এরপর তারা উড়িষ্যা এবং বাংলার কিছু অঞ্চলে বসতি সমপ্রসারিত করতে সক্ষম হয়। বাংলাসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাণিজ্য কুঠি নির্মাণের ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা থাকলেও পর্তুগীজদের বিভিন্ন অপকর্ম ও দস্যুতার কারণে বাংলার সুবেদার শায়েস্তা খান তাদের চট্টগ্রাম ও সন্দ্বীপের ঘাঁটি দখল করে বাংলা থেকে বিতাড়ন করেন। তাছাড়া পর্তুগীজরা এদেশে আগত অন্যান্য ইউরোপীয় শক্তির সঙ্গেও প্রতিদ্বন্দ্বীতায় পরাজিত হয়। ফলে এরা এ দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়।