চট্টগ্রাম জেলা

পূর্ব নামঃ বাংলাদেশের সর্বপ্রথম জেলা চট্টগ্রাম ১৬৬৬ সালে সৃষ্টি এই জেলার। পূর্বে এর নাম ছিল ইসলামাবাদ / পোর্টো গ্র্যান্ডে / চট্টলা/চাটগাঁও। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যে প্রাচ্যের রাণী হিসেবে বিখ্যাত।

অবস্থানঃ< চট্টগ্রাম শহর কর্ণফূলি নদীর মোহনায় অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের প্রধান সামুদ্রিক বন্দর শহর। এ শহরকে বাণিজ্যিক রাজধানীও বলা হয়।

উল্লেখযোগ্য ব্যাক্তিত্বঃ প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার ; ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস; সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ; সূর্য সেন; সৈয়দ আহমদুল্লাহ মাইজভান্ডারী; আবদুল গফুর হালী; সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ; আবুল ফজল (সাহিত্যিক); আহমদ ছফা; আহমদ শরীফ; মাহবুব উল আলম চৌধুরী (কবি); মাহাবুব উল আলম (সাহিত্যিক); শাহ মুহম্মদ সগীর; শেফালী ঘোষ; কুমার বিশ্বজিৎ; আইয়ুব বাচ্চু; তামিম ইকবাল; মুহাম্মদ এনামুল হক, বিপ্রদাস বড়ুয়া, নবীন চন্দ্র সেন, সৈয়দ সুলতান, মুহাম্মদ খান, দৌলত উজির বাহরাম খান, সাবিরিদ খান/ শাহ বারিদ খান ।

EPZ ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম EPZ স্থাপিত হয়— হালিশহর, চট্টগ্রাম। বাংলাদেশের সর্বশেষ ইপিজেড — কর্ণফুলী (পতেঙ্গা, )। – দুটি বেসরকারি EPZ (i) রাঙ্গুনিয়া ইপিজেড (ii) কোরিয়ান ইপিজেড

উপজাতি পার্বত্য চট্টগ্রামে মোট ১১টি উপজাতি বাস করে। চট্টগ্রামে বসবাসকারী উপজাতি তঞ্চঙ্গ্যা ( এছাড়া ও তঞ্চঙ্গ্যা রাঙামাটি, বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজা্রে বাস করে)

দর্শনীয় স্থানঃ পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, ফয়’স লেক, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, হযরত শাহ আমানত (র:) এর মাজার, হযরত বায়েজীদ বোস্তামী (র:) এর দরগাহ, জাতিতাত্ত্বিক যাদুঘর, ওয়ার সিমেট্রি, ডিসি হিল, বাটালি হিল, কোর্ট বিল্ডিং (জেলা প্রশাসকের কার্যালয়), চন্দ্রনাথ পাহাড় (সীতাকুন্ড), বাঁশখালী ইকোপার্ক, পারকি সমুদ্র সৈকত (আনোয়ারা)। মহামায়া লেক, মহুরি প্রজেক্ট, খৈইয়াছরা ঝরনা (মিরসরাই)।

উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানঃ

  • বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি অবস্থিত– ভাটিয়ারি, চট্টগ্রাম;
  • বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি অবস্থিত–পতেঙ্গা , চট্টগ্রাম;
  • বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি অবস্থিত— জলদিয়া;
  • বাংলাদেশ রাইফেলস ট্রেনিং ‘বায়তুল ইজ্জত’ সাতাকনিয়া, চট্টগ্রাম;
  • জিয়া স্মৃতি যাদুঘর— চট্টগ্রাম;
  • বাংলাদেশের এক মাত্র তেল শোধনাগার—ইস্টার্ন রিফাইনারী (পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম);
  • বাংলাদেশের বৃহত্তম লৌহ ও ইস্পাত কারখানা অবস্থিত— ‘চট্টগ্রাম স্টীল মিল’—– চট্টগ্রাম

নদ-নদীঃ কর্ণুফুলি, হালদা, সাঙ্গু ।

পর্তুগিজদের আগমন ১৫১৭ সাল থেকে পর্তুগিজরা চট্টগ্রামে আসতে শুরু করে। বাণিজ্যের চেয়ে তাদের মধ্যে জলদস্যুতার বিষয়টি প্রবল ছিল। সুলতান প্রবলভাবে তাদের দমনের চেষ্টা করেন। কিন্তু এ সময় আফগান শাসক শের শাহ বাংলা আক্রমণ করবে শুনে ভীত সন্ত্রস্ত হোসেন শাহ পর্তুগিজদের সহায়তা কামনা করেন। তখন সামরিক সহায়তার বিনিময়ে ১৫৩৭ সালে পর্তুগিজরা চট্টগ্রামে বাণিজ্য কুঠি নির্মান করে। একই সঙ্গে তাদেরকে বন্দর এলাকার শুল্ক আদায়ের অধিকার দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ১৫৩৮ সালে শের শাহ‌-র সেনাপতি চট্টগ্রাম দখল করে। তবে, ১৫৮০ পর্যন্ত আফগান শাসনামলে সবসময় ত্রিপুরা আর আরাকানীদের সঙ্গে যুদ্ধ চলেছে। ১৫৮১ সাল থেকে ১৬৬৬ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম সম্পূর্ণভাবে আরাকান রাজাদের অধীনে শাসিত হয়। তবে, পর্তুগিজ জলদস্যুদের দৌরাত্ন্য এ সময় খুবই বৃদ্ধি পায়। বাধ্য হয়ে আরাকান রাজা ১৬০৩ ও ১৬০৭ সালে শক্ত হাতে পর্তুগিজদের দমন করেন। ১৬০৭ সালেই ফরাসি পরিব্রাজক ডি লাভাল চট্টগ্রাম সফর করেন।তবে সে সময় পর্তুগিজ জলদস্যু গঞ্জালেস সন্দীপ দখল করে রাখে। পর্তুগিজ মিশনারি পাদ্রি ম্যানরিক ১৬৩০-১৬৩৪ সময়কালে চট্টগ্রামে উপস্থিতকালে চট্টগ্রাম শাসক আলামেনের প্রশংসা করে যান। ১৬৬৬ সালে চট্টগ্রাম মোগলদের হস্তগত হয়।

অন্যান্য তথ্যঃ এখানে দেশের সর্ববৃহৎ বন্দর ছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এটি এশিয়ায় ৭ম এবং বিশ্বের ১০ম দ্রুততম ক্রমবর্ধমান শহর। প্রায় ১৩৪৬ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম আসেন বিখ্যাত মুর পরিব্রাজক ইবনে বতুতা। তিনি লিখেছেন -“বাংলাদেশের যে শহরে আমরা প্রবেশ করলাম তা হল সোদকাওয়াঙ (চট্টগ্রাম)….। হোসেন শাহ‌-এর সময়ে উত্তর চট্টগ্রামের নায়েব পরবগল খানের পুত্র ছুটি খাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় শ্রীকর নন্দী মহাভারতের একটি পর্বের বঙ্গানুবাদ করেন। শায়েস্তা খাঁ মগ জলদস্যুদের চট্টগ্রাম থেকে বিতারিত করেন ১৬৬৪ সালে। তার দুই বছর পরই চট্টগ্রাম মোগলদের হস্তগত হয়। এবং জেলায় উন্নীত হয়।

<- গাজীপুর
বান্দরবান->