লোকসাহিত্য কি?

বিগত সালের BCS Preliminary- তে এখান থেকে প্রশ্ন এসেছে টি।

সংক্ষিপ্তাকারে- লোকের মুখে প্রচলিত কাহিনি, ছড়া, গান ইত্যাদিকে লোকসাহিত্য বলে। (২৮তম বিসিএস প্রিলিমিনারি) অতীত ঐতিহ্য ও বর্তমান অভিজ্ঞতাকে আশ্রয় করে যেসকল সাহিত্যগুণ সম্পন্ন সৃষ্টি মানুষের মুখে মুখে ফেরে সেগুলোকে লোকসাহিত্য হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। সাধারণত অক্ষরজ্ঞানহীন পল্লিবাসীরা স্মৃতি ও শ্রুতির ওপর নির্ভর করে এর লালন করে। মূলে ব্যক্তিবিশেষের রচনা হলেও সমষ্টির চর্চায় তা পুষ্টি ও পরিপক্কতা লাভ করে। বিষয়, ভাষা ও রীতির ক্ষেত্রে প্রচলিত ধারাই এতে অনুসৃত হয়। কল্পনাশক্তি, উদ্ভাবন-ক্ষমতা ও পরিশীলিত চিন্তার অভাব থাকলেও লোকসাহিত্যে শিল্পসৌন্দর্য, রস ও আনন্দবোধের অভাব থাকে না। মানব জীবনের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, ইতিহাস-ঐতিহ্য, জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা ও ধ্যান-ধারণা লোকসাহিত্যের বিষয়বস্তু হিসাবে পরিগণিত হয়ে আসছে।
লোকসাহিত্যকে প্রধানত গীতিকা, লোককাহিনী, লোকসঙ্গীত, লোকনাট্য, ছড়া, মন্ত্র, ধাঁধা ও প্রবাদ এই আটটি শাখায় ভাগ করা যায়। ডাক ও খনার বচনকে লোকসাহিত্যের আদি নিদর্শন হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
ছড়া যেমন-

রোদ হচ্ছে, পানি হচ্ছে,
খেঁকশিয়ালীর বিয়ে হচ্ছে।

আরেকটি ছড়া-

এক হাত বোল্লার রার হাত শিং
উড়ে যায় বোল্লা ধা তিং তিং

‘আল্লাহ ম্যাঘ দে পানি দে, ছায়া দে রে তুই’ গানে বৃষ্টির জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করা হয়েছে। এমন আবেদন সরাসরি মেঘের কাছেও করা হয়েছে, যেমন:

‘মেঘ রাজারে তুইনি সুদর ভাই
এক ঝাড়ি মেঘ দে ভিজ্যা ঘরে যাই।’

রংপুরের রাজবংশী কৃষকদের মধ্যে ‘হুদমার গান’ নামে এক ধরণের লোকসঙ্গীত প্রচলিত আছে। হুদমা হচ্ছে মেঘের দেবতা; কৃষক রমণীরা রাত্রিবেলা নগ্ন হয়ে কৃষিক্ষেতে নাচ-গান করে এবং পানি ঢেলে নকল চাষের অভিনয় করে।

Add a Comment