ত/ৎ, তা, তো, ত্ত, ত্ব, ত্ত্ব
|ৎ/ত
‘ৎ’-এর সাথে স্বরচিহ্ন যোগ হলে ‘ত’ হবে। যেমন— জগৎ>জগতে জাগতিক, বিদ্যুৎ>বিদ্যুতে বৈদ্যুতিক, ভবিষ্যৎ>ভবিষ্যতে, আত্মসাৎ>আত্মসাতে, সাক্ষাৎ>সাক্ষাতে ইত্যাদি।
যে-সব বানানে প্রায়ই ‘ৎ’ ব্যবহার করি কিন্তু হবে ‘ত’ –
উচিত=উচ্+ত(ক্ত)
ত্বরিত = ত্বর্+ত(ক্ত)
তো
হয়তো, নয়তো বাদে সকল তো আলাদা হবে। যেমন— আমি তো যাই নি, সে তো আসে নি ইত্যাদি।
[দ্রষ্টব্য: মূল শব্দের শেষে আলাদা তো ব্যবহারের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।]
ত্ব, তা
ত্ব, তাঃ কার্য স্বভাব, গুণ, অবস্থা, প্রকৃতি, বৃত্তি প্রভৃতি বাচক বিশেষ্য পদের প্রত্যয় হিসাবে ব্যবহার হয়। যেমন- জড়ত্ব, জড়তা ইত্যাদি।
ঋত্বিক = বৈদিক যজ্ঞের পুরোহিত, যাজক।
কবিত্ব = কবির ভাব, কৃতিত্ব, কর্তৃত্ব, দায়িত্ব(দায়ী), নেতৃত্ব, মনুষ্যত্ব, স্থায়িত্ব(স্থায়ী), সান্ত্বনা, দেবত্ব, ত্বদীয়(তোমার), ত্বাদৃশ(তোমার মত) , চত্বর, ণত্ব-বিধান, মন্ত্রিত্ব, মমত্ব।
তর= বিভোর, নিমগ্ন, চুর(এই শরাবের পিয়ালা দিয়ে তর করে দিল।
তর= উত্তরণ, পার, গমন( দুস্তর গিরি- পার হওয়া যায় না এমন পাহার- কাজী নজরুল ইসলাম।)
তর/ত্বর= দেরি, বিলম্ব, অপেক্ষা(তর সয় না বর, দিনেই বিয়ে কর)
তড়া= তীর, কূল, তট।
ত্বরা= শীঘ্র, তড়, ব্যস্ততা, ব্যগ্রতা,
ত্বরিত = তাড়াতাড়ি, দ্রুত, ক্ষিপ্র, বেগ বাড়ানো হয়েছে এমন,
তড়িৎ = বিদ্যুৎ
তরিত= পার হয়েছে এমন।
ত্বরান্বিত (ত্বরা+অন্বিত) দ্রুত বা দ্রুততর করা হয়েছে এমন; ত্বরিত; শীঘ্র, ক্ষিপ্র।
ত্ত
দত্ত- দেওয়া বা অর্পণ করা।
ইয়ত্তা – সংখ্যা, পরিমাণ, সীমা।
আয়ত্ত – অধিকার বা দখল, তাই স্বায়ত্তশাসন, করায়ত্ত, রাষ্ট্রায়ত্ত ইত্যাদি সঠিক। তবে ‘আয়ত্তাধীন’ লিখলে বাহুল্য দোষ ঘটবে কেননা, ‘অধীন’ ও ‘আয়ত্ত’ একই শব্দ।
পুনরাবৃত্তি- আবার ঘটা।
নিষ্পত্তি- মীমাংসা।
কৃত্তিবাস ওঝার রচিত কৃত্তিবাসী রামায়ন।
উত্তম, উত্তর, উত্তীর্ণ, উদাত্ত, প্রবৃত্তি, প্রমত্ত, আপত্তি, আবৃত্তি, আসত্তি(মিলন, নৈকট্য), উত্তরাধীকারী, উত্তরায়ণ, উত্তরীয়, উত্তরোত্তর(উত্তর+উত্তর) উত্তর, উত্তাপ, উত্তেজনা, উত্তোলন, উন্মত্ত, উপাত্ত,
ত্ত্ব
তত্ত্ব=
১. আসল বস্তু, প্রকৃত অবস্থা, যথার্থ্য, সত্য (তত্ত্বদর্শী)
২. স্বরূপ (তত্ত্বজ্ঞান)
৩. মূলউপাদান (চতুর্বিংশতি তত্ত্ব, যথা- ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ, ব্যোম ইত্যাদি। )
৪. তথ্য
৫. পদার্থ
৬. খবর, বার্তা, সংবাদ, সন্দেশ(তত্ত্ব লওয়া)
৭. অনুসন্ধান, খোঁজ (তত্ত্ব লওয়া)
৮. কুটুম্বিতা জ্ঞাপক উপহার(বিয়ের তত্ত্ব)
৯. ব্রহ্মা, ঈশ্বর(তত্ত্বজ্ঞান)
১০. পারমার্থিক জ্ঞান(তত্ত্ব কথা)
১১. মতবাদ( মধ্যাকর্ষণ তত্ত্ব, )
১২. দর্শন, বিজ্ঞান, তদ্বিষয়ক জ্ঞান(বোধিসত্ত্ব, মনস্তত্ত্ব, কৃষি তত্ত্ব, নন্দন-তত্ত্ব, পুরা-তত্ত্ব )
তত্ত্বাবধান, তত্ত্বাবধায়ক, তত্ত্বানুসন্ধান, তত্ত্বালোচনা, তত্ত্বীয়, নৃতত্ত্ব, ভাষাতত্ত্ব, তত্ত্ব, কৃত্ত্ব(ছিন্ন), প্রত্নতাত্ত্বিক
স্ব= নিজ
সৎ = (১) সাধু (২) সতিন সম্পর্কিত
সত্তা= অস্তিত্ব, (ব্যক্তিসত্তা, জাতীয় সত্তা)
স্বতঃ = স্বয়ং, নিজে(স্বতঃপ্রবৃত্ত)
স্বত্ব – মালিকানা (স্বত্বাধি-কারী, জমির স্বত্ব) ,নিজত্ব বা আমাত্ব, অধিকার । বাবার জমিতে মেয়ের স্বত্ব থাকে।(মেয়ের অধিকার থাকা প্রসঙ্গে)
সত্ত্বেও-কোনো কিছু থাকলেও বা ঘটলেও-এই অর্থবোধক (বারবার বলা সত্ত্বেও করল না, ধনসত্ত্বেও অভাব
সত্ত্ব = অস্তিত্ব বা বিদ্যমান থাকা, ফলের রস বোঝাতে, কোনো গুণের অধিকারী বোঝাতে বা ত্রিগুণের শ্রেষ্ঠটি। যেমন-
মেয়েটি অন্তসত্ত্বা (অস্তিত্ব)
কাঁঠালের আমসত্ত্ব(ফলের রস)
তিনি একজন সাত্ত্বিক পুরুষ(গুণ)
টাকা থাকা সত্ত্বেও সে হাত পাতে(বিদ্যমান)