শনিবারের চিঠি
|এই সাপ্তাহিক সাহিত্য পত্রটি ১৯৩০-৪০-এর দশকে কোলকাতা কেন্দ্রিক বাঙলা সাহিত্যের জগতে বিশেষ সাড়া জাগিয়েছিল। এর সঙ্গে কল্লোল গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব ছিল আক্রমণাত্মক ; তবে তা সে সময়কার সাহিত্যপ্রেরণাকে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল। এর প্রাণপুরুষ ছিলেন সজনীকান্ত দাস। পত্রিকাটি দুপর্যায়ে প্রকাশিত হয়েছিল। ১০ই শ্রাবণ ১৩৩১ (১৯২৪ খৃস্টাব্দ)। প্রতিষ্ঠাদা সম্পাদক যোগানন্দ দাস। ভাদ্র ১৩৩৪ এবং ফালগুন ১৩৩৪ শেকে সজনীকান্ত দাষ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এতে যারা লিখেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম মোহিতলাল মজুমদার এবং নিরোদ সি চৌধুরী। এঁদের ভাষা ছিল ব্যঙ্গময়। সমালোচনার লক্ষ্য ছিল পিত্ত জ্বালিয়ে দেয়া। এ পত্রিকায় কাজী নজরুল ইসলামকে কটাক্ষ করে বলা হত ‘গাজি আব্বাস বিটকেল’।
রবীন্দ্রনাথ-প্রমথ চৌধুরী-শরৎচন্দ্র থেকে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ লেখকদের সংখ্যায় সংখ্যায় তুলোধোনা করে পত্রিকাটি সকলের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে গিয়েছিল। এর সঙ্গে কল্লোল গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব ছিল আক্রমণাত্মক ; পাশ্চাত্য আধুনিকতার স্পর্শে উদ্বেলিত কল্লোল যুগের চার পাশ ঘিরে ছিল শনি’র চক্র। তবে শনিবারের চিঠি সে সময়কার সাহিত্যচেতনাকে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল।
শনিবারের চিঠি’র অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ছিল এর “সংবাদ সাহিত্য”। এই অংশে সমসাময়িক কালে প্রকাশিত কবিতা, উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ ইত্যাদি সম্পর্কে খবরাদি প্রকাশ করা হতো। ভাষা ছিল রম্য, কার্যত ব্যঙ্গার্থক। কবি জীবনানন্দ দাশ যখন ছিলেন স্বল্পালোচিত তখন শনিবারের চিঠিতে তাঁর অন্তত ৩৩টি কবিতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল।