ব্যান্ড তত্ত্ব অনুসারে কঠিন পদার্থের প্রকারভেদ
|তড়িৎ পরিবাহিতা ধর্মের উপর ভিত্তি করে কঠিন পদার্থকে তিনভাগে ভাগ করা যায়। যথা- (ক) অন্তরক (খ) পরিবাহক (গ) অর্ধপরিবাহক । ব্যান্ড তত্ত্বের সাহায্যে এদের প্রত্যেকের আচরণ ব্যাখ্যা করা যায়।
অন্তরক(Insulator): যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ চলতে পারে না তাদেরকে অন্তরক বলে। যেমন কাঁচ, কাঠ ইত্যাদি। অন্তরকের আপেক্ষিক রোধ অনেক বেশি, প্রায় 1012Ωm ক্রমের। অন্তরকে যোজন ব্যান্ড আংশিক পূর্ণ থাকে ও পরিবহণ ব্যান্ড সম্পূর্ণ ফাঁকা থাকে। এছাড়া যোজন ব্যান্ড ও পরিবহণ ব্যান্ডের মধ্যবর্তী শক্তি ব্যবধান অনেক বেশি, 6eV থেকে 15eV.
পরিবাহক(Conductor): যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে সহজে বিদ্যুৎ পরিবহণ করতে পারে তাদেরকে পরিবাহক বলে। সাধারণত ধাতব পদার্থ তড়িৎ সুপরিবাহক। যেমন- তামা রূপা, এ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি। এদের আপেক্ষিক রোধ কম হয়-প্রায় 10-8Ωm ক্রমের। এসকল পদার্থে পরিবহণ ব্যান্ড ও যোজন ব্যান্ডের মাঝে শক্তি ব্যান্ড তো থাকেই না বরং কোন কোন ক্ষেত্রে এদের উপরিলেপন (Overlap) ঘটে। এজন্য পরিবাহকের দুই প্রান্তে সামান্য বিভব পার্থক্য সৃষ্টি করলে সহজেই তড়িৎ প্রবাহিত হয়।
অর্ধপরিবাহক(Semiconductor): অন্তরক ও পরিবাহক পদার্থের মাঝামাঝি আপেক্ষিক রোধের কিছু পদার্থ আছে সেগুলোকে বলা হয় অর্ধপরিবাহক। যেমন – জার্মেনিয়াম, সিলিকন, ইত্যাদি। এদের রোধকত্ব বা আপেক্ষিক রোধ 10-4Ωm ক্রমের। এতে পরিবহণ ব্যান্ড ও যোজন ব্যান্ডের শক্তি ব্যবধান 1.1eV. পরম শূন্য তাপমাত্রা (শূন্য কেলভিন) এরা অন্তরকের মত কাজ করে। তাই নির্দিষ্ট পরিমাণ পর্যন্ত তাপমাত্রা বাড়াতে থাকলে এদের পরিবাহকত্ব বৃদ্ধি পায়। এতে নির্দিষ্ট পরিমাণ অপদ্রব্য মেশালে(Doping) এদের পরিবাহকত্ব বৃদ্ধি পায়।