প্রেসার কুকার

স্বাভাবিক বায়ুচাপে পানির স্ফটনাংক ১০০° সেলসিয়াস। রান্নার সময় আপনি চুলার আঁচ যতই বাড়িয়ে দিন না কেন, পানিসহ তরকারির তাপমাত্রা ১০০° সেলসিয়াস এর উপরে উঠবে না। কারন কোন তরল স্ফুটনাঙ্কে পৌছানোর পর ঐ তরলের তাপমাত্রা আর বাড়ানো যায় না (যদি বায়ুচাপ না বাড়ানো হয়)। কিন্তু কোনভাবে যদি এই তাপমাত্রা ১০০° এর চেয়ে বাড়ানো যেত, তাহলে রান্না করতে আরো অনেক কম সময় লাগতো। কারণ তখন পানির তাপমাত্রা বেশি থাকত বলে তরকারি তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হত। যেমন পাহারের উপর বায়ুর চাপ কম বলে সেখানে পানি ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে না ফুটে ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেই ফোটে। তাই পাহাড়ের উপর রান্না করা কঠিন। অর্থাৎ পানি সহ মাংস রান্না শুরু করলে, মাংস সিদ্ধ হবার আগেই পানি বাষ্পে পরিণত হয়ে শেষ হয়ে যাবে।

বায়ুচাপ বেড়ে গেলে পানির স্ফুটনাঙ্কও বেড়ে যায়, আর চাপ কমে গেলে স্ফুটনাঙ্ক কমে যায়। এই নীতির উপর ভিত্তি করে ফরাসি বিজ্ঞানি ডেনিস পেপিন, পেপিন ডাইজেস্টার নামে একটি যন্ত্র তৈরি করেন। যা বর্তমানে আমরা প্রেসার কুকার নামে চিনি। প্রেসার কুকারে একটি বন্ধ চাপ ব্যবস্থা তৈরি করা হয়। প্রেসার কুকারের নিচে পানি রাখার একটি ট্যাঙ্ক থাকে। সেই ট্যাঙ্কের পানি বাষ্প হয়ে প্রেসার কুকারের ভিতরে জমা হয়। ঢাকনা সিল করা থাকায় বাষ্প বাইরে বের হতে পারে না। সুতরাং প্রেসার কুকারের ভিতরের চাপ ক্রমশ বাড়তে থাকে। চাপ বাড়ার কারণে পানির স্ফুটনাঙ্কও বেড়ে যায় তখন পানি ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এ না ফুটে প্রায় ১২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ফোটে। আর এই অধিক তাপে প্রেসার কুকারের তরকারী বা মাংসও তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়।

Add a Comment