GI Product

জি আই হলো Geographical Indication বা ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য। জি আই হলো একটি সাইন যেটা নির্দিষ্ট একটি পণ্যের জন্য ব্যবহার করা হয়, যা কোনো নির্দিষ্ট ভৌগলিক এলাকার পণ্যের পরিচিতি বহন করে। এতে পণ্যটি ঐ দেশের পণ্য হিসেবে খ্যাতি পায় এবং প্রতিযোগিতামলূক বিশ্ববাজারে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়।

কোনো দেশের নির্দিষ্ট কোনো একটি পণ্য যখন ঐতিহ্যবাহী হয় তখন এটিকে সেই দেশের জন্য বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান করে নিতে এর একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত স্ট্যান্ডার্ড প্যাটেন্ট দেওয়া হয়। এটিকে ব্যবসা-বাণিজ্যের ভাষায় আন্তর্জাতিকভাবে জিওগ্রাফিক্যাল ইনডেক্স (জিআই) বা ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য বলা হয়ে থাকে।
মেধাস্বত্ব- বিষয়ক বৈশ্বিক সংস্থা WIPO (World Intellectual Property Organization) এটি নিবন্ধন দেয় এবং GI পণ্য স্বীকৃতি দানকারী। বাংলাদেশের পক্ষে আবেদন করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি)।

কোনো একটি দেশের মাটি, পানি, আবহাওয়া এবং ওই জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাহলে সেটিকে ওই দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। অর্থাৎ সেই পণ্য শুধু ওই এলাকা ছাড়া অন্য কোথাও উৎপাদন করা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশের এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহ্যবাহী পণ্য রয়েছে যেগুলো আগে কখনোই সঠিক উদ্যোগের অভাবে জিআই পণ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়নি। কিন্তু বর্তমান সরকার এ উদ্যোগটি গ্রহণ করেছে। জি আই পণ্যের জন্য বাংলাদেশ আবেদন করে ২০১৪ সালে।

এরই অংশ হিসেবে প্রথম জিআই পণ্যের স্ট্যাটাসটি পেয়েছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও বিখ্যাত জামদানি শাড়ি। জামদানির পর বাংলাদেশের ইলিশ মাছ ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
বাংলাদেশের জি আই পণ্য দুইটি।

  1. জামদানি শাড়ি ( ২০১৬)
  2. ইলিশ (২০১৭)

ইলিশ স্বীকৃতি পায় ৬ আগষ্ট কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে সনদ পায় ২৪ আগষ্ট ২০১৭। ওয়ার্ল্ড ফিশের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বিশ্বের মোট ইলিশের ৬৫ শতাংশ উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে। ভারতে ১৫ শতাংশ, মিয়ানমারে ১০ শতাংশ, আরব সাগর তীরবর্তী দেশগুলো এবং প্রশান্ত ও আটলান্টিক মহাসাগর তীরবর্তী দেশগুলোতে বাকি ইলিশ ধরা পড়ে। ইলিশ আছে বিশ্বের এমন ১১টি দেশের মধ্যে ১০টিতেই ইলিশের উৎপাদন কমছে। একমাত্র বাংলাদেশেই ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। দেশে মোট মৎস্য উৎপাদনের ইলিশের অবদান ১২% আর জিডিপিতে ১.১৫%।

জিআই নিবন্ধন পেলে সুবিধা:

জিআই পণ্য হিসেবে যেসব পণ্যের নিবন্ধন কোনো দেশ পাবেন তারা যেসকল সুবিধা পাবেন তাহলো:
১. সংশিষ্ট পণ্যের মালিক হবে সেই দেশ। ভৌগোলিক পরিচিতও পাবে সেই দেশ।
২. তারা সেই পণ্যের ব্যবসায়িক মুনাফার সম্পূর্ণ অংশের মালিক হবেন।
৩. আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এসব পণ্যের মালিকানা বা স্বত্ব আর কোনো দেশ দাবি করতে পারবে না।
৪. দেশের মধ্যেও অন্য কোনো এলাকার জনগোষ্ঠী এ পণ্যের মালিকানা পাবে না।

From Zakir’s BCS specials: সবুজ কর্মকার

Add a Comment