হাজি শরীয়ত উল্লাহ
|হাজী শরীয়তুল্লাহ (১৭৮১-১৮৪০) ধর্মীয় সংস্কারক, নীলকর ও সামন্তবাদ বিরোধী নেতা এবং ভারতবর্ষে সংঘটিত ফরায়েজি আন্দোলনের নেতা। তিনি শুধু ধর্মীয় সংস্কারক ছিলেন না, বরং কৃষক, তাঁতি এং অন্যান্য শ্রমজীবী মানুষকে শোষণ থেকে মুক্ত করার জন্য সংস্কার আন্দোলন পরিচালনা করেছিলেন।
প্রারম্ভিক জীবন
শরীয়তুল্লাহর জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশের মাদারিপুর জেলার চর শামাইল (বাহাদুরপুর) গ্রামের এক দরিদ্র তালুকদার পরিবারে। তিনি মক্কা শরীফে ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে গমন করেন, এবং ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে সেখান থেকে বাংলায় ফিরে আসেন। তিনি আরবি ভাষায় পন্ডিত ছিলেন।
সামাজিক অবদান
দেশে ফিরে তিনি আরবের ওয়াহাবী আন্দোলনের আদলে ফরায়েজি আন্দোলন শুরু করেন। নীলকর ও অত্যাচারী জমিদারদের বিরুদ্ধে প্রচার চালাতেন। তার প্রবর্তিত ধর্মমত ছিল আধুনিক ও মানবতাবাদী। মুসলিম ধর্মের উৎপীড়নমূলক নিয়ম রদ করে ভন্ড মোল্লা মৌলবীদের হাত থেকে তার শিষ্যদের রক্ষা করেন। একারনে রক্ষণশীল ধনী মুসলমানগনেরা তাকে ঢাকা থেকে বিতাড়িত করে। ফরিদপুর ও ঢাকা জেলার অসংখ্য কৃষক তার শিষ্যত্ব গ্রহন করেছিল। তার ছেলে দুদু মিয়াও একজন ঐতিহাসিক যোদ্ধা ও ফরায়েজী আন্দোলনের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব। তিনি নীলকরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ব্রিটিশদের তাড়ানোতে ভূমিকা রেখেছিলেন।
স্মৃতি
শরীয়তুল্লাহ’র নামানুসারে বাংলাদেশের শরিয়তপুর জেলার নামকরণ করা হয়েছে। এছাড়া তার নামে মাদারিপুরের শিবচরে আড়িয়াল খাঁ নদের উপরে নির্মিত সেতুটির নাম করণ করা হয়েছে হাজী শরীয়তউল্লাহ সেতু।