ন্যাম(NAM)
|Non-Aligned Movement- NAM বা জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন, ৩য় বিশ্বের দেশসমূহের প্রথম সংগঠন
খুঁটিনাটি তথ্য:
’NAM’ শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন = ১৯৫৩ সালে ভি কে কৃষ্ণ মেনন, জাতিসংঘে। মেননের বন্ধু জওহরলাল নেহরু ১৯৫৪ সালে ’জোট নিরপেক্ষ’ শব্দটি আবারো ব্যবহার করেন ।
পঞ্চশীল নীতির প্রবক্তা = ভারতের জওহরলাল নেহরু এবং চিনা প্রধানমন্ত্রী চৌ-এন-লাই
ন্যামের কো-অরডিনেটিং বুরো = নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র।
১ম মহাসচিব = মার্শাল টিটো (যুগোস্লোভিয়া)
বর্তমান মহাসচিব = প্রেসিডেন্ট নিকলাস মাদুরো।
বর্তমান চেয়ারম্যান = ভেনিজুয়েলা(সংস্থাটির চেয়ারম্যান সর্বদাই দেশ থাকে, ব্যাক্তি নয়)
বর্তমান সদস্য সংখ্যা = ১২০। (৩৬, ২২তম বিসিএস প্রিলিমিনারি)
সর্বশেষ সদস্য – আজারবাইজান ও ফিজি।
সর্বশেষ সম্মেলন = ২০১৬ সালে ভেনিজুয়েলায় অনুষ্ঠিত হয়। (১৭ তম) তিন বছর পর পর এর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
পরবর্তী সম্মেলন = ২০১৯ সালে আজারবাইজানে অনুষ্ঠিত হবে।
সিদ্বান্ত গ্রহণ প্রকিয়া = সদস্য রাষ্ট্রের সরকার প্রধানদের ন্যাম সম্মেলনে অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে সকল সিদ্বান্ত গ্রহণ করা হয়। (By a conference of Heads of State or Government of Non-Aligned Countries)
বান্দুং সম্মেলন, ১৯৫৫ (উদ্যোগ, প্রতিষ্ঠা ও পেক্ষাপট)
১৯৫৫ সালের এপ্রিলে ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং- (২৫, ২৩তম বিসিএস প্রিলিমিনারি) অনুষ্ঠিত বান্দুং কনফারেন্স ছিল ন্যামের ইতিহাসে প্রথম গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ন্যামের প্রথম সম্মেলনে ২৫ টি দেশ অংশ গ্রহন করে। ন্যাম আসলে নিজস্ব অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক আইডেনটিটি’র অন্বেষার বার্তা শোনায়।
.
এই কনফারেন্সেই ইন্দোনেশিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট আহমেদ সুকর্ণ বলেন,
“অনেক প্রজন্ম ধরেই আমরা পৃথিবীতে ছিলাম বাকহীন। সেই মানুষগুলো, যারা অশেষ দারিদ্র্য ও অবমাননার মধ্যে রয়েছে, তাদের জন্য যারা সিদ্ধান্তগুলো নেয় তাতে তাদেরই স্বার্থ প্রাধান্য পায়”।
বেলগ্রেড সম্মেলন, ১৯৬১ (উদ্যোগ, প্রতিষ্ঠা ও পেক্ষাপট)
কাগজে কলমে ’জোট নিরপেক্ষের’ জন্মসাল সেপ্টেম্বর,১৯৬১ সাল, স্থান যুগোস্লাভিয়ার বেলগ্রেড; প্রথম সম্মেলনও এখানে হয়। (২৫, ১৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি) সংগঠনটির পোশাকী নাম ’জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন’ ওরফে ন্যাম অর্জন করে আরো পরে, ১৯৬৪ সালে -মিসরের কায়রোতে অনুষ্ঠিত ৪৭ টি রাষ্ট্রীয় প্রধানদের অংশগ্রহণে পঞ্চম সম্মেলনের সময়ে।
ন্যামের প্রতিষ্ঠাতা : পাঁচ বিশ্ব রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
ইন্দোনেশিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট আহমেদ সুকর্ণ, ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, যুগোস্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট জোসেফ মার্শাল টিটো, মিসরের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট জামাল আব্দুল নাসের ও ঘানার প্রেসিডেন্ট ডঃ কোয়ামে নক্রুমা। (২৩তম বিসিএস প্রিলিমিনারি) পাঁচ দেশের এই পাঁচ নেতার সক্রিয় উদ্যোগ “পাঁচের উদ্যোগ” নামে পরিচিতি পায়। ন্যাম এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার উন্নয়নশীল দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা মঞ্চে পরিণত হয়। আকারের দিক দিয়ে বর্তমানে ন্যাম, জাতিসংঘের পরেই, দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক সংস্থা। ন্যামের কাঠামোগত গঠণ এমন যে নিউইয়র্কে অস্থায়ী ঠিকানা ছাড়া কোন স্থায়ী কার্যালয় এর নেই। অর্থাৎ কাঠামোগতভাবে অত্যন্ত ঢিলেঢালা সংগঠন একটি।
পঞ্চশীল নীতি
১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে উদ্ভাবিত এই পঞ্চশীল নীতিই হল জোট নিরপেক্ষ নীতির মূলকথা। ভারতের জওহরলাল নেহরু এবং চিনা প্রধানমন্ত্রী চৌ-এন-লাই ছিলেন এই নীতির অন্যতম প্রবক্তা। ভারতের জোটনিরপেক্ষ বিদেশনীতি পঞ্চশীলের উপর স্থাপিত।
পঞ্চশীল নীতি গুলো হল:
(ক) প্রতিটি স্বাধীন দেশের ভৌগোলিক অখন্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধাশীল হওয়া,
(খ) দ্বন্দ্ব-সংঘাত পরিত্যাগ বা অনাক্রমণ নীতি গ্রহণ করা,
(গ) অন্য কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকা,
(ঘ) পারস্পরিক সাম্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করা এবং
(ঙ) শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে সকল সমস্যার সমাধান করা ।
পঞ্চশীল নীতি সম্পর্কে আরও জানতে ভিজিট করুন–
Collected from Facebook Group বিসিএস ও অন্যান্য চাকুরীর প্রস্তুতি