সুশাসন

ল্যাটিন আমেরিকা ও আফ্রিকা মহাদেশে বিশ্বব্যাংকের ব্যর্থতার ফলে ১৯৮৯ সালে বিশ্বব্যাংক কর্তৃক সুশাসনের ধারণাটি উদ্ভব হয়। এটি বিশ্বব্যাংকের প্রেসক্রিপশন নামে পরিচিত।

‘সুশাসন’ একটি অংশগ্রহণমূলক শাসন ব্যবস্থা। তাই আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ‘সুশাসন’ শব্দটি ব্যাপকভাবে আলচিত হয়। আধুনিক বিশ্বে এর গুরুত্ব উপলব্ধি করে ১৯৯৫ সালে ADB এবং ১৯৯৮ সালে IDA সুশাসনের উপর প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সকল জটিলতা ও প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে সর্বাধিক জনকল্যাণ সাধনই এর প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

সুশাসন কী?

গুড গভর্ন্যান্স (Good Governance ) বা সুশাসনের জন্য দরকার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা। ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রচলনের ফলে সরকারি ব্যবস্থাসমূহকে আধুনিক ও যুগােপযোগী করার পাশাপাশি সরকারি ব্যবস্থাসমূহের সবচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব। এর ফলে নাগরিকের হয়রানি ও বিড়ম্বনার অবসান ঘটে এবং দেশে সুশাসনের পথ নিষ্কণ্টক হয়। শাসন ব্যবস্থায় ও প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রনিক বা ডিজিটাল পদ্ধতির প্রয়োগই হচ্ছে ই-গভর্ন্যান্স।

সুশাসনের গুরুত্বঃ

‘সুশাসন’ একটি দ্বিমুখী প্রত্যয়। প্লেটোর ‘রিপাবলিক’ গ্রন্থে প্রথম এর ধারণা পাওয়া যায়। এখানে এক পক্ষ জনগণ ও অন্য পক্ষ সরকার। এটি নাগরিকদেরকে তাদের অধিকার ভোগ করার নিশ্চয়তা প্রদান করে। তাই সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে নাগরিকগণ আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ ও অধিকার ভোগ করতে পারে। সুশাসন হচ্ছে এমন এক ব্যবস্থা যার মাধ্যমে শাসক-শাসিতের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। আর এই প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতীয় জীবনে সমৃদ্ধি আনায়ন করে।আর এর গুরুত্ব উপলব্ধি করে আশির দশকের দ্বিতীয়ার্ধে বিশ্বব্যাংক সুশাসনকে উন্নয়নের এজেন্ডাভুক্ত করে। এতে সরকার ও জনগনের অংশগ্রহন নিশ্চিত হয় ও উভয়েই লাভবান হয় বলে সুশাসনকে সরকার ও জনগনের ‘Win Win Game’ বলা হয়। আইএমএফ এর মতে,’ দেশের উন্নয়নে প্রতিটি স্তরের জন্য সুশাসন আবশ্যক।’ তবে সুশাসনের এই তাৎপর্য গ্রামীণ সাধারণ মানুষের নিকট অজানা।

জাতিসংঘের মতে, ‘সুশাসনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হল মৌলিক স্বাধীনতার উন্নয়ন।’

UNDP এর মতে,’সুশাসন সকলের অংশগ্রহনের মাধ্যমে অর্থপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করে।’

অন্যদিকে,জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের মতে,'”Good governence is perhaps the single most important factor in eradicating proverty and promoting development।”

ম্যাককরনির মতে, ‘সুশাসন বলতে রাষ্ট্রের সাথে সুশীল সমাজের, সরকারের সাথে জনগনের, শাসকের সাথে শাসিতের সম্পর্ককে বোঝায়।’

সুশাসনের বৈশিষ্ট/সুশাসন প্রতিষ্ঠার শর্তগুলো

আইনের শাসন
মানবাধিকার সংরক্ষণ
শাসন ব্যবস্থায় স্বছতা
প্রশাসনিক কার্যক্রমে জবাবদিহিতা
সকলক্ষেত্রে সমতা
সকলের প্রতি ন্যায়পরায়ণতা
জনগণের মতামতের প্রতিশ্রদ্ধাবোধ
জাতীয় শুদ্ধাচার

পেপার ক্লিপিং
সুশাসন ও বাংলাদেশ
সুশাসন ও উন্নয়ন
সুশাসন ও উন্নয়ন :প্রেক্ষিত বাংলাদেশ
সুশাসনের হাল-হকিকত
সুশাসনের অন্তরায় : উত্তরণের উপায়
সুশাসন ও শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠা কেন জরুরি
সুশাসন ছাড়া গণতন্ত্র ও উন্নয়ন উভয়ই অকার্যকর

Add a Comment