সুশাসন ও বাংলাদেশ

সুশাসন ও বাংলাদেশের সংবিধানঃ

আধুনিক রাষ্ট্রসমূহ কল্যানমূখী। আর রাষ্ট্রকে কল্যাণমূখী করতে সুশাসন বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই। সুশাসন বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সংবিধানে বেশকিছু অনুচ্ছেদ সন্নিবেশিত হয়েছে।

অনুচ্ছেদ ১১- এখানে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। যেহেতু গণতন্ত্র হল সুশাসনের প্রাণ। তাই বলা যায়, এই অনুচ্ছেদে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের স্বীকৃতির মাধ্যমে রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে।

অনুচ্ছেদ ৫৯ ও ৬০- এই দুই অনুচ্ছেদে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠা (৫৯ অনুচ্ছেদ) ও এর ক্ষমতা (৬০ অনুচ্ছেদ) সম্পর্কে বলা হয়েছে। যেহেতু গণতন্ত্র মানেই জণগনের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ এনং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা জণগনের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ নিশ্চিতের নিশ্চয়তা প্রদান করে। তাই বলা যায় এই দুই অনুচ্ছেদের মাধ্যমে সুশাসনের নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে।

অনুচ্ছেদ ৭৭- এই অনুচ্ছেদে সরকারি কর্মচারিদের দুর্নীতি প্রতিরোধ করার ব্যবস্থা হিসেবে ন্যায়পাল (Ombudsman) এর বিধান যুক্ত করা হয়েছে।ন্যায়পাল তার উপর অর্পিত ক্ষমতা বলে সরকারের যেকোন সংস্থার কার্যাবলি তদন্ত করার ক্ষমতা রাখেন। ১৮০৯ সালে সুইডেনে সর্বপ্রথম ন্যায়পালের বিধান জারি করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে বাংলাদেশের সংবিধানে এই বিধান যুক্ত করা হয়।তবে এটি এখন পর্যন্ত কার্যকর করা হয় নি।

এছাড়া সংবিধানে তৃতীয় ভাগে (অনুচ্ছেদ ২৬-৪৭) নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে এবং অষ্টম ভাগে ( অনুচ্ছেদ১২৭-১৩২) সরকারি অর্থের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের বিধান যুক্ত করা হয়েছে।

সুতরাং বলা যায়,দেশে সুশাসন বাস্তবায়নের সকল প্রকার সাংবিধানিক নিশ্চয়তা(Constitutional guarantee) আমাদের সংবিধানে সন্নিবেশিত হয়েছে হয়েছে।
বাংলাদেশে সুশাসনের অবস্থা
নির্বাহী নিয়ন্ত্রণঃ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রায় ১৬ বছর রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন বিদ্যমান ছিল। তারপর যখন সংসদীয় সরকার পদ্ধতি ফিরে আসল তখন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী Floor Crossing সমস্যা এখনও রয়ে গেছে। যা সুশাসনের অন্তরায়।

আইন প্রণয়নে সমস্যাঃ বর্তমানে আইন প্রণয়নে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, বিরোধীদল নিপীড়ন, মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করা ইত্যাদি বিষয়গুলো চলে আসে। তাছাড়া আইন প্রণয়নে বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় না আসা, টেকনিক্যাল বিষয়গুলো খোলামেলা আলোচনা না হওয়া, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গে সম্পৃক্ত না করার মত ঘটনা ও ঘটে।
রাজনৈতিক জবাবদিহিতাঃ নির্বাচিত হলে প্রতিনিধিরা যেন জনগণ তো ছাড়, সময় সময় আইনের ও ঊর্ধে চলে যান। আর নির্বাচন যদি সুষ্ঠু না হয় তো ‘জবাবদিহিতা’ নামক কোন শব্দই যে তাঁদের অভিধানে থাকবে না, তা খুবই ন্যায়সঙ্গত।

এছাড়া নিম্নোক্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার প্রয়াস পাওয়া যায়।
আমলাতান্ত্রিক কাঠামো ও জটিলতাঃ
স্থানীয় সরকার কাঠামোঃ
স্বাধীন এবং দক্ষ বিচার ব্যবস্থাঃ
মতপ্রকাশের স্বাধীনতাঃ
রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দুর্নীতিঃ
পুলিশ ও প্রশাসনকে রাজনীতিকরণঃ
নিয়োগ ও সরকারি কাজে দলীয় লোকঃ
দুর্নীতি দমন কমিশনের অকার্যকারিতাঃ
প্রশাসন সহ রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক প্রভাব।

Add a Comment