BCS-Solution

স্বদেশী আন্দোলন

স্বদেশী আন্দোলন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একটি অংশ। স্বদেশী আদর্শে উদ্বুদ্ধ এই আন্দোলনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল অর্থনৈতিকভাবে ব্রিটিশ শক্তিকে ক্ষতিগ্রস্থ করে ভারত থেকে ব্রিটিশ শাসনের উচ্ছেদসাধন এবং দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উন্নতিসাধন। আন্দোলনের রণকৌশলের অন্তর্গত ছিল ব্রিটিশ পণ্য বয়কট এবং দেশীয় শিল্প ও উৎপাদন প্রক্রিয়ার উন্নতিসাধন।

স্বদেশী আন্দোলনের উৎস ছিল ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী গণজাগরণ। এটি ১৯১১ সাল পর্যন্ত চলেছিলো। শেষ দিকে আন্দোলন ব্রিটিশ পণ্য বয়কট ও বর্জনে আর সীমাবদ্ধ থাকেনি, রূপ নেয় সশস্ত্র আন্দোলনে। সশস্ত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয় ঢাকার ‘অনুশীলন সমিতি’ ও কলকাতার ‘যুগন্তর পার্টি’ ।
এই আন্দোলন ছিল প্রাক-গান্ধী যুগের সফলতম আন্দোলনগুলির অন্যতম। স্বদেশী আন্দোলনের মুখ্য প্রবক্তাগণ ছিলেন সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী, পুলিন বিহারী দে, বারীন্দ্রকুমার ঘোষ, মতিলাল ঘোষ, কৃষ্ণকুমার মিত্র, অরবিন্দ ঘোষ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বীর সাভারকর, লোকমান্য বাল গঙ্গাধর তিলক, ও লালা লাজপত রায়। স্বদেশী আন্দোলনের পক্ষে প্রচার চালাতে গিয়ে অনেক কবি-সাহিত্যিকগণ অনেক গান, কবিতা ও প্রবন্ধ রচনা করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্বদেশী গান লেখেন- “আমার সোনার বাংলা” ও “বাংলার মাটি বাংলার জল”। এছাড়াও দিজেন্দ্রলাল রায়, রজনীকান্ত সেন ও চারণ কবি মুকুন্দ দাস গান রচনা করেন।

পরবর্তীকালে স্বদেশী রণকৌশলটিকে গ্রহণ করে মহাত্মা গান্ধী এটিকে স্বরাজ-এর আত্মা রূপে বর্ণনা করেন। এটি বাংলায় সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী ছিলো এবং এটিকে বন্দে মাতরম আন্দোলনও বলা হতো।

Exit mobile version