BCS-Solution

শান্তির সংস্কৃতি

“শান্তির সংস্কৃতি” কী ?
শান্তির সংস্কৃতি” প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক জাতিসংঘে প্রথম উপস্থাপিত হয় ১৯৯৭ সালে । এর পরিপ্রেক্ষিতে “শান্তির সংস্কৃতি দশক” বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হয়। ২০০১ থেকে প্রতি বছর জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন এ প্রস্তাবটি উপস্থাপন করে আসছে এবং তা প্রতিবছরই সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়ে আসছে।

এই প্রস্তাবের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে – সমাজ থেকে অসহিষ্ণুতা ও ঘৃণা দূরীভূত হলে বিশ্বে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। এবারের প্রস্তাবে যুব শক্তি ও নারীর জন্য কর্ম প্রক্রিয়ার ভূমিকাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ প্রস্তাব বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বিশ্বে মমত্ববোধ বাড়বে। মানুষে মানুষে হিংসা-বিদ্বেষ এবং যুদ্ধবিগ্রহ হ্রাস পাবে। পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও ভালবাসা দৃঢ় হবে। যা সব দেশ ও বিশ্বের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে ২৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সাধারণ পরিষদের এক সভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন সকল কো-স্পন্সর দেশের পক্ষ থেকে প্রস্তাবনাটি উত্থাপন করেন এবং সভায় উপস্থিত জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রের সমর্থনে এ প্রস্তাব গৃহীত হয়।

প্রস্তাব উপস্থাপনকালে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘মানুষের জন্য স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য ধর্ম, বর্ণ, জাতি ও গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকলের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বাড়াতে হবে। শিক্ষার প্রসার এবং একদর্শী চিন্তাধারার পরিবর্তন করে মানুষের সামগ্রিক উন্নয়ন, স্থিতিশীলতা ও শান্তি নিশ্চিত করা সম্ভব।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেশে শান্তির সংস্কৃতি বিকাশে বদ্ধ পরিকর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রদত্ত শান্তিপূর্ণ সহ-অবস্থান, সামাজিক ন্যায়বিচার, দারিদ্র্য, ক্ষুধা, বঞ্চনা ও আগ্রাসনমুক্ত একটি বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘জাতীয়ভাবে এ লক্ষ্য অর্জনে সরকার সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে।’.

সাধারণ পরিষদের সভাপতি তার উদ্বোধনী বক্তব্যে শান্তির সংস্কৃতি প্রস্তাবনায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক জঙ্গি আক্রমণ ও অসহিঞ্চুতা মোকাবিলায় শান্তির সংস্কৃতি চর্চার গুরুত্ব আরও বেড়েছে।

বিশ্ব ব্যবস্থায় নানামুখী টানাপোড়েন সত্ত্বেও এবছরের প্রস্তাবে বিপুল সমর্থন এটাই প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশের প্রস্তাবনার প্রতি বিশ্ববাসীর গভীর আস্থা অটুট আছে এবং বিশ্ব উন্নয়নে সকল মানুষকে সম্পৃক্ত করার জন্য শান্তির সংস্কৃতির বিকল্প নেই।

এ বছর ইউরোপীয় অনেক দেশসহ সবকটি মহাদেশের ১০০ এর অধিক দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে এই প্রস্তাবের কো-স্পন্সর করে। ২০টি দেশের প্রতিনিধি এই প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য দিয়েছেন। সকলেই এ “শান্তির সংস্কৃতি” প্রস্তাব বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

Exit mobile version