BCS-Solution

রোহিঙ্গা সমস্যা ও বিশ্ব

ভারতঃ
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারতের ভূমিকা কী হবে তা নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছেন ভারতের দুই বিশেষজ্ঞ। নিরাপত্তা বিষয়ে আয়োজিত দ্বিতীয় কর্ম অধিবেশনে ভারতের সাবেক জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনেরেল(অবঃ) সৈয়দ আতা হোসেন বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের সমর্থনে ভারতের আক্রমণাত্মক কূটনীতি চালানো উচিত। অথচ একই কর্ম অধিবেশনে ভারতের গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইডিএসের গবেষণা ফেলো পুষ্পিতা দাস বলেন, চীনের সঙ্গে ভারতের কৌশলগত সম্পর্কের বিষয় থাকার কারণে মিয়ানমারকে বেশি চাপ দিতে পারে না ভারত।

চীনঃ চীন বাংলাদেশের পাশে আছে বলে জানাচ্ছে ও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসার মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে।

জাপানঃ জাপানের নীতিনির্ধারকদের ধারণা, মিয়ানমারের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করা হলে দেশটি চীনের দিকে আরও বেশি করে ঝুঁকে পড়বে এবং জাপান সেখানে নিজস্ব অবস্থান হারাবে। অন্যদিকে বাংলাদেশের বেলায় সেই দুই সম্ভাবনার কোনোটাই সে রকম তীব্র নয় বলে জাপানি নেতৃত্বের ধারণা।

অস্ট্রেলিয়াঃ সিডনিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল এক বৈঠক করেন। বৈঠকে ম্যালকম টার্নবুল রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে থাকার ক্ষেত্রে তাঁর দেশের অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন ও রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করেন।

আসিয়ানঃ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংগঠন আসিয়ানও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মানবিক সহায়তা ছাড়া আর কিছু করতে পারবে না বলে জানিয়েছে।

এডিবি ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় এডিবির ৫২তম সম্মেলনে ব্যাংক্টির চেয়ারম্যান বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেন। ও রোহিঙ্গা সমস্যা সংলশ্লিষ্ট দেশগুলোকে সহযোগিতা করার করা বলেন।

ও আই সিঃ ৫৭টি মুসলিম দেশের জোট ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৫তম দুই দিনের বার্ষিক বৈঠক ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে ‘ঢাকা ঘোষণা’য় রোহিঙ্গা সমাধানের বিষয়টি গুরুত্ব পায়। মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা তদন্ত করতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রী পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে ওআইসি। ঐ কমিটি নিরাপত্তা পরিষদসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এবং বেসরকারি সাহায্য সংস্থাসহ বিভিন্ন পক্ষকে নিয়ে অপরাধের বিচারের জন্য মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে কাজ করতে।

আইসিসিঃ আইসিসি এর প্রি ট্রায়াল চেম্বার বাংলাদেশের কাছে মতামত চেয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের উচিৎ, যুক্তি ও তথ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংগঠিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্তের পক্ষে মতামত দেওয়া।

বিমসটেক বিমসটেকের নিরাপত্তাপ্রধানদের প্রথম বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছিল বলে তখন (২১ মার্চ ২০১৭) ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল, তাতে দেখা যায় যে বঙ্গোপসাগরকে অভিন্ন নিরাপত্তার ক্ষেত্র (কমন সিকিউরিটি স্পেস) বিবেচনা করে অভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অভিন্ন কৌশল প্রণয়নের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছিল। বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, বঙ্গোপসাগরীয় এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি সন্ত্রাসবাদ সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে রয়েছে। সন্ত্রাসবাদ, সহিংস উগ্রপন্থা এবং র‍্যাডিক্যালাইজেশন মোকাবিলায় সদস্যদেশগুলোর নিরাপত্তা, গোয়েন্দা সংস্থা এবং আইন প্রয়োগকারীদের মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয় বাড়ানোর ব্যবস্থা জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার কথাও তাতে বলা হয়েছিল।

যদি প্রশ্ন করা হয়, এই অঞ্চলের সাম্প্রতিক কালের সবচেয়ে বড় অস্থিরতা সৃষ্টিকারী ঘটনা কোনটি? নিঃসন্দেহে উত্তর হবে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের জাতিগত নির্মূল অভিযান ও উদ্বাস্তুপ্রবাহ। মিয়ানমার থেকে নিষ্ঠুর ও সহিংস উপায়ে বিতাড়নের বিষয়টিকে তারা কীভাবে মূল্যায়ন করেছেন? তাহলে ঢাকায় এসব দেশের নিরাপত্তাপ্রধানেরা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার বিষয়ে যেসব আলোচনা করলেন, সেখানে রোহিঙ্গা ইস্যু কতটা গুরুত্ব পেল? শুধু ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে নাগরিকত্বের স্বীকৃতিবঞ্চিত প্রায় ১০ লাখ নিরপরাধ ও নিরীহ বেসামরিক লোকজনকে ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদের উদ্দেশ্যে মিয়ানমারের পোড়ামাটি নীতি অনুসরণের কী ব্যাখ্যা এই বৈঠকে মিলল, তার কোনো উল্লেখ বিমসটেকের বিজ্ঞপ্তিতে নেই।


👉 Read More...👇
Exit mobile version