রাষ্ট্র ও সরকারের সম্পর্ক

‘রাষ্ট্র’ ও ‘সরকার’ এ দুটি অনেক সময় সমার্থক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। প্রাচীনকালেও রাষ্ট্র ও সরকারকে একই অর্থে ব্যবহার করা হত। কিন্তু এ দুটির মধ্যে মৌলিক পার্থক্য আছে। রাষ্ট্র একটি পূর্ণাঙ্গ ও স্থায়ী প্রতিষ্ঠান। এটি সার্বভৌম বা সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। আর সরকার রাষ্ট্র গঠনের চারটি উপাদানের (জনসংখ্যা, ভূখণ্ড, সরকার ও সার্বভৌমত্ব) মধ্যে একটি উপাদান মাত্র। পৃথিবীর সব রাষ্ট্র একই উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত হলেও সব রাষ্ট্র ও সরকারব্যবস্থা এক ধরনের নয়। আবার সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে যেকোনো দেশে রাষ্ট্র ও সরকারের স্বরূপ পরিবর্তিত হতে পারে। ফ্রান্সের চতুর্দশ লুই বলতেন, “আমিই রাষ্ট্র”।

রাষ্ট্র ও সরকারের মধ্যে পার্থক্য

  1. রাষ্ট্র যে চারটি উপাদান নিয়ে গঠিত, সরকার তার একটি।
  2. রাষ্ট্র স্থায়ী, কিন্তু সরকার অস্থায়ী ও পরিবর্তনশীল। রাষ্ট্রের শাসন কাজ পরিচালনার জন্য সরকার পরিবর্তন হয়। কিন্তু রাষ্ট্রের পরিবর্তন হয় না।
  3. রাষ্ট্র একটি বিমূর্ত ধারণা, কিন্তু সরকার একটি বাস্তব প্রতিষ্ঠান। রাষ্ট্রকে অনুধাবন করা যায় দেখা যায় না। কিন্তু সরকারকে দেখা যায়।
  4. রাষ্ট্র মোট জনসমষ্টি নিয়ে গঠিত হয়। আর সরকার ঐ জনসমষ্টির এক ক্ষুদ্র অংশ নিয়ে গঠিত হয়।
  5. রাষ্ট্র সার্বভৌম বা চরম ক্ষমতার অধিকারী, আর সরকার সেই ক্ষমতার বাস্তবায়নকারী মাত্র।
  6. রাষ্ট্রের প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট অভিন্ন। কিন্তু সরকার নানা ধরনের হতে পারে।
  7. সকল রাষ্ট্রের উপাদান একই রকম। কিন্তু এক এক রাষ্ট্রে এক এক সরকার দেখা যায়।

রাষ্ট্র ও সরকারের মধ্যে যত পার্থক্যই থাকুক না কেন এ দুটি পরস্পর ঘনিষ্ট সম্পর্ক যুক্ত। সরকার না থাকলে রাষ্ট্র কল্পনা করা যায় না, আবার রাষ্ট্র না থাকলে সরকারের কথা ভাবাই যায় না। বর্তমান গণতান্ত্রিক যুগে সরকার মানে জনপ্রতিনিধিত্ব। তাছারা রাষ্ট্রের আদেশ ও নিষেধ সরকারের মাধ্যমেই প্রকাশিত ও প্রতিফলিত হয়। রাষ্ট্রের যে সার্বভৌম ক্ষমতা আছে তা সরকারের দ্বারা বাস্তবায়িত হয়।


👉 Read More...👇

Add a Comment