নারীর ক্ষমতায়ন

বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক হলো নারী। সমাজের অর্ধেক অংশকে অধিকার বঞ্চিত রেখে কোন সমাজ উন্নতি লাভ করতে পারেনা। তাই বর্তমানে সারা বিশ্ব নারীর ক্ষমতায়নকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। পরিবার, সমাজ ও জাতীয় ক্ষেত্রে নারীর অংশ গ্রহণ, মতামত প্রকাশ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাই নারীর ক্ষমতায়ন। নারীর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সকল ক্ষেত্রে নারী পুরুষের অধিকারের সমতা বজায় রাখতে হবে। এর গুরুত্ব উপলদ্ধি করে ১৯৪৮ সালে মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র এবং জাতিসংঘ নারী উন্নয়নে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ১৯৫১ সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা কর্তৃক একই ধরণের কাজের জন্য নারী ও পুরুষ শ্রমিকের জন্য একই বেতন দান এবং ১৯৫২ সালে নারীর রাজনৈতিক অধিকারের কথা ঘোষণা করে। যার ফলে নির্বাচনে নারী ভোট দান ও প্রতিদ্বন্ধিতা করতে পারেন। ১৯৬০ সালে নারীদের কর্ম সংস্থান ও পেশার ক্ষেত্রে বৈষম্য বিলোপ সনদ প্রদান করা হয় যা ১৯৭৯ সালের ডিসেম্বর মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। বাংলাদেশসহ মোট ১৩২টি দেশ বর্তমানে এ সনদ সমর্থন করেছে।

স্থানীয় সরকারে নারীর অংশগ্রহণ আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। নারীরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন সর্বত্র নির্বাচনে জয়লাভ করে নাগরিক হিসেবে স্থানীয় সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণকে প্রভাবিত করতে সক্ষম হচ্ছে। উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালের প্রণীত আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে ৪,৪৮৪টি ইউনিয়ন পরিষদে ১৩,৪৫২টি নারী সদস্য পদ সৃষ্টি করা হয়। এই আইনের মাধ্যমে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে ৩টি করে সংরক্ষিত নারী আসনের ব্যবস্থা রাখা হয়, যারা সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত। স্থানীয় সরকারের অন্যান্য স্তরেও নারীর অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তা নিম্নরূপ-

স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানমোট আসনসংরক্ষিত নারী আসন
সিটি কর্পোরেশনঅনির্দিষ্টপ্রতি তিন ওয়ার্ডে একজন
পৌরসভা১৩প্রতি তিন ওয়ার্ডে একজন(নয় ওয়ার্ডে মোট ৩জন)
জেলা পরিষদ২১
উপজেলা পরিষদএকজন ভাইস চেয়ারম্যানের পদ
ইউনিয়ন পরিষদ১৩প্রতি তিন ওয়ার্ডে একজন(নয় ওয়ার্ডে মোট ৩জন)

তবে অবশ্যই উল্লেখ যে, সংরক্ষিত আসনগুলো ব্যতিত ও নারীরা যে কোন আসনের জন্য প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হতে পারেন। স্থানীয় পর্যায় ছাড়াও জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য ৫০ আসন সংরক্ষিত।

স্থানীয় সরকারে নারীর ক্ষমতায়নে বাস্তবতা
নারীর কর্মপরিধি নির্ধানে ত্রুটিঃ অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় নারী কর্ম পরিধীর বাস্তব রূপ নেই। আবার থাকলে ও তাতে নারীর কর্তৃত্ব যথাযথ ভাবে প্রকাশ পায় না।

পুরুষ সদস্যের প্রভাবঃ তিনটি ওয়ার্ড মিলে এক জন নারী সদস্য থাকেন। ফলে তিনি নিজেই নিজেকে ঐচ্ছিক ভাবতে শুরু করেন। তার উপর পুরুষ সদস্যদের প্রভাব তো আছেই।

কর্ম ক্ষেত্রঃ পুরুষ সদস্য যেখানে এক ওয়ার্ডে সর্বেসর্বা, নারীকে সেখানে ঐ তিন পুরুষ সদস্যের কর্মক্ষেত্রে কাজ করতে হয়।

অনেক সময় নারী অযোগ্যতা, অনীহা, অপারগতা, অধিকার অসচেতনতা নারীকে যথাযথ ক্ষমতায়নে বাঁধা দেয়।

তাই নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়ন দেখতে চাইলে উপরোক্ত সমস্যা গুলো কাটিয়ে উঠতে হবে।


👉 Read More...👇

Add a Comment