কলা

বিগত সালের BCS Preliminary- তে এখান থেকে প্রশ্ন এসেছে টি।

কলা অতি জনপ্রিয় একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল। এ ফলে প্রচুর পরিমাণে শর্করা, ভিটামিন এ, বি, সি এবং ক্যালসিয়াম, লৌহ ও পর্যাপ্ত খাদ্যশক্তি রয়েছে। অন্যান্য ফলের তুলনায় কলা দামে সস্তা এবং প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। তাই ধনী গরিব নির্বিশেষে সব মানুষ সহজেই কলা খেতে পারে। উৎপাদন, স্বাদ ও সুগন্ধের দিক থেকে শ্রেষ্ঠ হওয়ায় কলাকে ফলের রানী বলা হয়।

কলা গাছ বেরি (Berry) জাতীয় ফল উৎপাদন করে। এর প্রতিটি পুষ্পমঞ্জুরিতে উৎপাদিত ফল সমষ্টিকে ছড়া বা কাঁদি (bunch) বলা হয়। প্রতিটি ছড়া আবার ৫-১৫টি ফানায় (hand) বিভক্ত। কোথাও কোথাও ফানাকে কাঁদি বলে। প্রতিটি ফানায় সাধারণত ১২-১৬টি কলা (finger) থাকে।

বিশ্বব্যাপী এই জনপ্রিয় ফল সাধারণত উষ্ণ জলবায়ু সম্পন্ন দেশসমূহে কলা ভাল জন্মায়। তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াই কলার উৎপত্তিস্থল হিসাবে পরিগণিত। বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর বহু দেশে কলা অন্যতম প্রধান ফল। বাংলাদেশের নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, ময়মনসিংহ, যশোর, বরিশাল, বগুড়া, রংপুর, জয়পুরহাট, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, প্রভৃতি এলাকায় শত শত বৎসর যাবৎ ব্যাপকভাবে কলার চাষ হয়ে আসছে। বাংলাদেশে কলা চাষের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল সারা বছর এ দেশের প্রায় সব অঞ্চলের উঁচু জমিতেই এর চাষ করা যায়। কলম্বিয়া ইত্যাদি ল্যাটিন আমেরিকান দেশে কলা প্রধান অর্থকরী ফসল। প্রাগাধুনিক ভারতীয় অর্থনীতিতেও একটি প্রধান অর্থকরী ফসল হিসাবে কলার চাষাবাদ হতো। খনার বচনে আছে, “কলা রুয়ে না কেটো পাত, তাতেই কাপড়, তাতেই ভাত”। যার অর্থ হল কলা রুয়ে বা রোপন করে, পাতা না কেটে গাছকে বড় হতে দিলে, একদিন কলা হবে তা বিক্রি করেই কৃষক পোশাক পরিচ্ছদ ও খাবারের সংস্থান করতে পারবে।

প্রতি ১০০ গ্রাম পরিমাণ কলার খাদ্যগুণ
পানি ৭০.১%, আমিষ ১.২%, ফ্যাট (চর্বি) ০.৩%, খনিজ লবণ ০.৮%, আঁশ ০.৪%, শর্করা ৭.২%, ক্যালসিয়াম ৮৫ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৫০ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স ৮ মিলিগ্রাম এবং ভিটামিন-সিও রয়েছে কলায়।

বাংলাদেশে চাষকৃত করার জাত
কৃষি বিজ্ঞানীদের মতে, বাংলাদেশে প্রায় ৪০-৫০টি জাতের কলার চাষ হয়। এগুলোর মধ্যে অমৃতসাগর, সবরি, কবরি, চাঁপা, সিঙ্গাপুরী বা কাবুলী, মেহেরসাগর, এঁটে বা বিচিকলা, কাঁচকলা বা আনাজি কলা, জয়েন্ট গভর্নর এসব উল্লেখযোগ্য। এদের মধ্যে উচ্চ ফলনশীল রয়েছে যেমন- অমৃতসাগর, মেহেরসাগর, সবরি, সিঙ্গাপুরী, অগ্নিশ্বর, কানাইবাঁশী, মোহনবাশী, (১০তম বিসিএস প্রিলিমিনারি) বীটজবা ইত্যাদি। পার্বত্য এলাকায় বনকলা, বাংলাকলা, মামা কলাসহ বিভিন্ন ধরনের বুনোজাতের কলা চাষ হয়।

বাংলাদেশে কলা বেশিপরিমাণ উৎপন্ন হয় নরসিংদী জেলায়। কলা গবেষণা কেন্দ্র ঢাকায় অবস্থিত।

Add a Comment