BCS-Solution

ওয়েজ আর্নার্স স্কিম

ওয়েজ আর্নার্স স্কিম ১৯৭৪ সালে প্রবর্তিত হয়। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিকদের অর্জিত আয় সরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রেরণে উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে স্কিমটি চালু করা হয়। এ সময় বৈদেশিক মুদ্রা মজুত থাকার কারণে আমদানিকারকদের অনুকূলে বৈদেশিক মুদ্রার ছাড় হ্রাস পায়, যার ফলে স্কিমটি কার্যকারিতা অর্জন করে। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমজীবীদের প্রেরিত অর্থ খোলাবাজার বিনিময় হারের কাছাকাছি হারে বিনিময়ের লক্ষ্যে স্কিমটি চালু করা হয়। বৈদেশিক মুদ্রার স্বল্পতার কারণে আমদানিকারকগণ সরকারি হার অপেক্ষা উচ্চ হারে সেকেন্ডারি মার্কেট হিসেবে গড়ে ওঠা ওয়েজ আর্নার মার্কেট থেকে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয় করতে থাকে। প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ বিদেশি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাসে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। মানবসম্পদ রপ্তানি থেকে অর্জিত আয় হিসেবে পরিগণিত প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ চলতি হিসাবে সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনকারী উৎসে পরিণত হয়।

বাংলাদেশ শ্রমিক রপ্তানির ক্ষেত্রে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম প্রধান দেশ। ১৯৭০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে নতুন চাকরির সুবিধা প্রসারিত হওয়ায় প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধির ধারা সূচিত হয়। স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে প্রায় ৭.৪ মিলিয়ন বাংলাদেশি কাজের জন্য বিদেশে গিয়েছে। ১৯৭৭-৭৮ সালে প্রবাসী কর্মজীবীর সংখ্যা ছিল মাত্র ১৭,০০০ জন এবং তা ১৯৯৮-৯৯ সালে ২,৭০,৪৯০ জনে উন্নীত হয়।

ওয়েজ আর্নাস স্কিমের অধীনে বাংলাদেশি প্রবাসীরা প্রায় ১৪.০৯% অর্থ প্রেরণ করেন। যা ১৯৯০-৯১ এবং ১৯৯৮-৯৯ সালে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ২১.৭৬% এবং ২১.৩০%। বাংলাদেশি প্রবাসীরা যেসব দেশ থেকে অর্থ প্রেরণ করে সেগুলির তালিকার শীর্ষে রয়েছে সৌদি আরব।

অতি সাম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে আরব বসন্ত শুরু হলে সেখানে অভিবাসী বাংলাদেশিদের অর্থ উপার্জন ও বাংলাদেশ থেকে শ্রমিকদের প্রেরণ হুমকির মুখে পড়ে।

Exit mobile version