মুক্তিযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকা
মুক্তিযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকা: বাংলাদেশের স্বাধীনতার পটভূমি
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রাম হিসেবে চিহ্নিত হয়। এই যুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমান রাশিয়া) গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক এবং সামরিক সহায়তা প্রদান করে, যা মুক্তিযোদ্ধাদের সংগ্রামে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১. রাজনৈতিক সহায়তা
- বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সমর্থন: সোভিয়েত ইউনিয়ন মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানায়। তারা পাকিস্তানের সামরিক সরকার এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী কণ্ঠস্বর তৈরি করে।
- জাতিসংঘে সমর্থন: সোভিয়েত ইউনিয়ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেয় এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উত্থাপন করে। তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার দাবি নিয়ে আলোচনা করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পেশ করে।
২. সামরিক সহায়তা
- অস্ত্র ও সরঞ্জাম সরবরাহ: সোভিয়েত ইউনিয়ন মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করে। তারা বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সহায়তা করে।
- ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সহায়তা: সোভিয়েত ইউনিয়ন ভারতের সঙ্গে সম্পর্কিত সামরিক সহযোগিতা বাড়িয়ে দেয়, যা মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ড মোকাবিলায় সহায়ক হয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভারতীয় সেনাবাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ করে এবং তাদের প্রশিক্ষণেও সহায়তা করে।
৩. আন্তর্জাতিক জনমত গঠন
- মানবাধিকার লঙ্ঘন সম্পর্কে সচেতনতা: সোভিয়েত ইউনিয়ন আন্তর্জাতিক ফোরামে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি উত্থাপন করে। তারা মিডিয়ার মাধ্যমে এই বিষয়গুলো বিশ্বময় ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
- কূটনৈতিক প্রচেষ্টা: সোভিয়েত ইউনিয়ন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে একটি ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা করে, যাতে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের সমর্থন করে।
উপসংহার
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা রাজনৈতিক, সামরিক, এবং কূটনৈতিক সহায়তা প্রদান করে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগ্রামে সহায়ক হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য শক্তি ও সাহস যোগায় এবং মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে একটি শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথকে প্রশস্ত করে।
4o mini
Related Posts
-
মুস্তফা মনোয়ার
No Comments | Dec 25, 2019
-
বাংলাদেশ
No Comments | Jul 8, 2017
-
ডক্টর কুদরত-ই খুদা
No Comments | Dec 5, 2017
-
লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস
No Comments | Feb 12, 2020