বিদেশিদের বাংলাদেশ ত্যাগের সুযোগ দান
|বিদেশিদের বাংলাদেশ ত্যাগের সুযোগ প্রদান: মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে (১৯৭১) দেশের পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গণহত্যা, ধর্ষণ, এবং শরণার্থী সঙ্কট সৃষ্টি করে, যার ফলে বিপুলসংখ্যক মানুষ দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়। এই অবস্থায় বিদেশিদের জন্য বাংলাদেশ ত্যাগের সুযোগ প্রদান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
পটভূমি
মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভে, ২৫ মার্চ ১৯৭১ তারিখে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী “অপারেশন সার্চলাইট” চালায়, যেখানে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বর্বরোচিত আক্রমণ করা হয়। এই আক্রমণের ফলে বিদেশি নাগরিক, সাংবাদিক, এবং সাহায্যকারী কর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং তারা দ্রুত দেশে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন।
বিদেশিদের নিরাপত্তা এবং ত্যাগের সুযোগ
- দেশত্যাগের অনুমতি:
- মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাদের দ্রুত দেশত্যাগের অনুমতি দেয়। বিভিন্ন দেশের দূতাবাস এবং কনস্যুলেটরা তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।
- বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফেরার ব্যবস্থা:
- অনেক বিদেশি নাগরিক, বিশেষ করে সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীরা, তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন সংস্থার সহায়তা গ্রহণ করেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এবং বিদেশি সরকারের মাধ্যমে ত্বরিত ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হয়।
- শরণার্থীদের সহায়তা:
- মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক বিদেশি নাগরিক বাংলাদেশের বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পে মানবিক সহায়তা প্রদান করেন। তবে পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটময় হওয়ায় অনেককেই তাড়াতাড়ি ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
বিশ্বজুড়ে এই সংকটের ফলে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়। বিভিন্ন দেশ পাকিস্তানি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় এবং বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়।
উপসংহার
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বিদেশিদের জন্য ত্যাগের সুযোগ প্রদান একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ ছিল, যা তাঁদের নিরাপত্তা এবং মানবিক পরিস্থিতি উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করাও এই সময়ের একটি উল্লেখযোগ্য দিক।