কৃষি শুমারি
|কৃষি শুমারি: বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতি ও উন্নয়নে গুরুত্ব
বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য নির্ভুল তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য নির্দিষ্ট সময় অন্তর কৃষি শুমারি পরিচালিত হয়। এই শুমারির মাধ্যমে দেশের কৃষি সম্পদের চিত্র তুলে ধরা হয়, যা কৃষি নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশে চাকরি পরীক্ষায় ‘কৃষি’ ও ‘অর্থনীতি’ সম্পর্কিত প্রশ্নে এই শুমারির প্রসঙ্গ প্রায়ই উঠে আসে।
কৃষি শুমারি কী?
কৃষি শুমারি হলো দেশের বিভিন্ন কৃষিজ সম্পদ, কৃষি জমির ধরন, ফসল উৎপাদন, কৃষক ও তাদের জীবনযাত্রার মান নিয়ে পরিচালিত একটি জাতীয় জরিপ। বাংলাদেশে কৃষি শুমারি সাধারণত প্রতি দশ বছর অন্তর পরিচালিত হয়। সর্বশেষ কৃষি শুমারি অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালে।
কৃষি শুমারির প্রধান বিষয়সমূহ
কৃষি শুমারির প্রধান লক্ষ্য হলো দেশের কৃষি ব্যবস্থার একটি সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরা। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকে:
- ফসল উৎপাদন: বিভিন্ন ধরনের ফসলের উৎপাদন ও চাষের পরিমাণ নির্ধারণ।
- কৃষি জমির ধরন: কৃষি জমির মোট আয়তন, আবাদি ও অনাবাদি জমির পরিমাণ জানা।
- জলবায়ুর প্রভাব: কৃষি উৎপাদনে জলবায়ুর প্রভাব এবং চাষাবাদের সময়কাল নির্ধারণ।
- কৃষকের সংখ্যা ও জীবনযাত্রা: কৃষকের সংখ্যা, তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং জীবনযাত্রার মান।
- গবাদি পশু ও পোল্ট্রি: দেশের গবাদি পশু, মুরগি ও হাঁসের সংখ্যা ও তাদের উৎপাদন পরিসংখ্যান।
- কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার: কৃষি যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি ব্যবহারের হার ও ধরণ নির্ধারণ।
কৃষি শুমারির উপকারীতা
কৃষি শুমারির মাধ্যমে সরকার, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং কৃষি বিশেষজ্ঞরা প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। এর উপকারিতা নিম্নরূপ:
- নীতি প্রণয়ন: সঠিক তথ্যের মাধ্যমে কৃষি নীতি প্রণয়ন সহজ হয়।
- খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: কৃষি উৎপাদনের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে খাদ্য মজুদ ও সরবরাহ পরিকল্পনা করা যায়।
- অর্থনৈতিক পরিকল্পনা: কৃষি খাতে বিনিয়োগ এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে শুমারির তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- গবেষণা ও উন্নয়ন: কৃষি গবেষণায় ভিত্তি তথ্য সরবরাহ এবং কৃষিক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তি প্রবর্তনে সহায়ক।
কৃষি শুমারির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বাংলাদেশ সরকার কৃষি শুমারির ফলাফলের ভিত্তিতে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে থাকে। আধুনিক প্রযুক্তি এবং স্যাটেলাইট ইমেজিংয়ের মাধ্যমে কৃষি শুমারির কার্যক্রম আরও উন্নত ও নির্ভুল করার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে, কৃষির সব খাতে উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সহজতর হবে।