মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯০৮ সালে বিহারের সাঁওতাল পরগনায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর আসল নাম প্রবোধ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পিতার নাম হরিহর বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাতা নীরদাসুন্দরী দেবী। তাঁর পৈত্রিক বাড়ি মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুর অঞ্চলের মালবদিয়া গ্রাম এবং মায়ের বাড়ি একই অঞ্চলের গাঁওদিয়া গ্রাম। ১৯২৬ সালে তিনি মেদিনীপুর জেলাস্কুল থেকে ম্যাট্রিক ও ১৯২৮ সালে বাঁকুড়া ওয়েসলিয় মিশন কলেজ থেকে আইএসসি পাশ করেন। তারপর গণিতে অনার্স নিয়ে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে বিএসসি ক্লাসে ভর্তি হন। কিন্তু বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরে ’অতসীমামী’ নামক গল্প বিচিত্রা পত্রিকায় প্রকাশিত হলে লেখক হিসেবে তাঁর নিয়তি নির্ধারিত হয়ে যায়। এ সময় তিনি লেখা নিয়ে এতই মগ্ন থাকেন যে অসাধারণ এই কৃতী ছাত্রের আর অনার্স পাশ করা হয়নি। মাত্র একুশ বছর বয়সে তিনি তাঁর বিখ্যাত ’দিবারাত্রির কাব্য’ রচনা করেন। এরপর তিনি লেখালেখিকেই জীবিকার একমাত্র অবলম্বন হিসেবে গ্রহণ করেন। এজন্য তাঁকে “কলম-পেষা-মজুর” বলা হয়। ফ্রয়েডীয় মনঃসমীক্ষণ ও মার্কসীয় শ্রেণীসংগ্রাম তত্ত্ব দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন যা তার রচনায় ফুটে উঠেছে। পদ্মা নদীর মাঝি ও পুতুল নাচের ইতিকথা লিখে তিনি বাংলা কথাসাহিত্যের সিংহাসনে আরোহণ করেন।

তাঁর উপন্যাসগুলোর মধ্যেঃ জননী(প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস), দিবারাত্রির কাব্য, পদ্মানদীর মাঝি, পুতুলনাচের ইতিকথা, শহরতলি , স্বাধীনতার স্বাদ, ইতিকথার পরের কথা, চিহ্ন, অমৃতস্য পুত্রা, চতুষ্কোণ, সোনার চেয়ে দামী। এগুলোর মাঝে পদ্মানদীর মাঝি, পুতুলনাচের ইতিকথা বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।

ছোটগল্পঃ অতসী মামী ও অন্যান্য গল্প(প্রথম প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ), প্রাগৈতিহাসিক, সরীসৃপ , আজ কাল পরশুর গল্প, ছোট বকুলপুরের যাত্রী, ফেরিওলা ইত্যাদি।

নাটকঃ ভিটেমাটি

মানিক বন্দোপাধ্যায় কিছুদিন নবারুণ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে এবং পরবর্তী কালে বঙ্গশ্রী পত্রিকার সহসম্পাদক হিসেবে কাজ করেন।

Add a Comment