কাজী নজরুল ইসলাম এর বিভিন্ন নাম

তিনি ছিলেন সাম্যের কবি, মৈত্রীর কবি, এছাড়াও তাঁর আরও কিছু নাম/উপাধী পাওয়া যায়।

দুখু মিয়াঃ আমরা সবাই জানি আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ডাক নাম ছিল “দুখু মিয়া”। মাত্র এগার-বার বছর বয়সের কিশোর কবিকে অন্ন জোটাতে উদয়াস্ত কঠিন পরিশ্রম করতে হয়েছে। কাজ করতে হয়েছে রুটির দোকানে এবং রাত্রীযাপন করতে হয়েছে ঐ দোকানেরই এক কোনো চিপা জায়গায়; নাম লেখাতে হয়েছে লেটোর দলে। তাঁর শৈশবকালের কঠিন জীবন সংগ্রামের জন্যই তাঁকে এ নামে ডাকা হতো।

ধুমকেতু – কবির ছদ্মনাম।

যুগের কবিঃ কাজী নজরুল ইসলামকে তাঁর সমসাময়িকেরা আখ্যায়িত করেছেন ‘যুগের কবি’ বলে। এই অভিধা অযৌক্তিক ও অসংগত ছিল না। কিন্তু কাকে যুগের কবি বলা যায়? যিনি যুগের দাবি পূরণ করেন, তিনিই যুগের কবি। তবে নজরুল সেই কবি যিনি তাঁর যুগের দাবিও পূরণ করেছেন, চিরকালের মানুষের জন্যও রেখে গেছেন তাঁর শাশ্বত বাণী। সুতরাং তিনি কালের কবি, একই সঙ্গে কালোত্তীর্ণ। যেসব সমস্যা তাঁর কালে ছিল এবং যত দিন তা পৃথিবীতে থাকবে, তত দিন তিনি প্রাসঙ্গিক, তত দিন তাঁর প্রয়োজন ফুরোবে না।

বুলবুলঃ কাজী নজরুল ইসলাম হিন্দু-মুসলিম উভয় ধর্মীয় গান রচনা করেছেন। ইসলামী গানের মধ্যে ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এল খুশির ঈদ’, ‘তোরা দেখে যা আমিনা মায়ের কোলে’, ‘মহরমের চাঁদ এল ঐ’ প্রভৃতি গানগুলো ব্যাপক জনপ্রিয়। আধুনিক বাংলা গানের জগতে তিনি বুলবুল নামে পরিচিত। তিনি অনেক শ্যামা সঙ্গীতেরও রচয়িতা।

বিদ্রোহী কবিঃ তাঁর লেখায় তিনি সামাজিক অবিচার ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। মানুষের সৃষ্ট কৃত্রিম সমাজ ব্যবস্থার ভণ্ডামীর মুখোশ উদ্‌ঘাটন ও মূল উৎপাটনে বিদ্রোহের প্রকাশ ঘটিয়েছেন। এজন্য তাঁকে ‘বিদ্রোহী কবি’ বলা হয়।

আব্বাস বিটকেলঃ ‘শনিবারের চিঠি’ পত্রিকার ভাদ্র সঙখ্যায় নজরুলকে ব্যঙ্গ করে ‘বাংলার আধুনিক বরপুত্র নবযুগ ধুরন্ধর সাহিত্য সারথি’ আখ্যা দিয়ে তাঁর ‘অনামিকা’ কবিতার একটি প্যারোডি ছাপা হয় ‘বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ’ নামে, যার রচয়িতা হিসাবে ছাপানো হয় হয় আব্বাস বিটকেল।

ব্যাঙাচি কবিঃ কবি হওয়ার আশায়, গান গাওয়ার আনন্দে ও উপার্জনের আশায় তিনি প্রথমে চাচা কাজী বজলে করিমের লেটো গানের দলে ও পরে ওস্তান শেখ চকোর গোদার দলে যোগ দেন। শেখ চকোর গোদা কবির তারিফ করে নাম দেন ব্যাঙাচি কবি।

Add a Comment