মীর মশাররফ হোসেন

বিগত সালের BCS Preliminary- তে এখান থেকে প্রশ্ন এসেছে ১০টি।

মীর মশাররফ হোসেন (নভেম্বর ১৩, ১৮৪৭ – ডিসেম্বর ১৯, ১৯১১) (৩০তম বিসিএস প্রিলিমিনারি) ছিলেন একজন বাঙালি ঔপন্যাসিক, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক। তিনি তৎকালীন বৃটিশ ভারতে (বর্তমান বাংলাদেশ) কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি উপজেলার চাঁপড়া ইউনিয়নের লাহিনীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলা ভাষার প্রথম ও প্রধান গদ্যশিল্পী ও বাঙালি মুসলমান সাহিত্যিকদের মধ্যে প্রথমেই উল্লেখযোগ্য (২৮, ২০তম বিসিএস প্রিলিমিনারি) কারবালার যুদ্ধকে উপজীব্য করে রচিত বিষাদ সিন্ধু তাঁর সবচেয়ে জনপ্রিয় সাহিত্যকর্ম। তিনি বাংলা সাহিত্যে গাজী মিয়া নামে পরিচিত। আধুনিক বাঙালি মুসলমান সাহিত্যিকদের পথিকৃৎ হলেন মীর মশাররফ হোসেন।

সাহিত্য চর্চা

বঙ্কিমচন্দ্রের দুর্গেশনন্দিনী (১৮৬৫) উপন্যাস প্রকাশিত হওয়ার চার বছর পর মশাররফের প্রথম উপন্যাস রত্নবতী (১৮৬৯) প্রকাশিত হয়। এরপর তিনি একে একে কবিতা, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, আত্মজীবনী, পাঠ্যপুস্তক ইত্যাদি বিষয়ে বহু গ্রন্থ রচনা করেন।

উপন্যাসঃ বিষাদ সিন্ধু (২০তম বিসিএস প্রিলিমিনারি) , তহমিনা, উদাসীন পথিকের মনের কথা, রত্নাবতী (লেখকের প্রথম উপন্যাস)।

কাব্যঃ বিবি খোদেজার বিবাহ, হজরত ওমরের ধর্ম্মজীবন লাভ, হজরত বেলালের বেলালের জীবনী, হজরত আমীর হামজার ধর্ম্মজীবন লাভ, মদিনার গৌরব, মোসলেম বীরত্ব।

নক্সাঃ বাজীমাৎ(কবিতায় রচিত নক্সা), গাজী মিয়াঁর বস্তানী (৩৯তম বিসিএস প্রিলিমিনারি)

নাটকঃ জমীদার দর্পণ, নিয়তি কি অবনতি, বেহুলা গীতাভিনয়( গদ্যে পদ্যে রচিত) (২৮তম বিসিএস প্রিলিমিনারি) , বসন্তকুমারী নাটক (লেখকের প্রথম নাটক) (১৪তম বিসিএস প্রিলিমিনারি)

আত্মজীবনী: আমার জীবনীর জীবনী বা বিবি কুলসুম, আমার জীবনী

পাঠ্যপুস্তকঃ মুসলমানের বাংলা শিক্ষা

গল্প রত্নবতী- গদ্যে রচিত প্রথম বাঙ্গালী মুসলমান রচিত গল্প।

প্রহসনঃ এর উপায় কি?

গানঃ সঙ্গীত লহরী

প্রবন্ধঃ গো-জীবন- এই গ্রন্থ রচনার দায়ে তাকে মামলায় জড়িয়ে পড়তে হয়।

প্রয়োজনীয় তথ্য

  1. উদাসীন পথিকের মনের কথা- এটি একটি আত্মজৈবনিক উপন্যাস (২৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি) নীলকরদের অত্যাচারের কাহিনী এতে সুন্দরভাবে রুপায়িত হয়েছে।
  2. বিষাদ সিন্ধুঃ বাংলা ভাষার একমাত্র গদ্য মহাকাব্য বলে বিবেচিত, এটি ইতিহাস আশ্রয়ী উপন্যাস। উপন্যাসটির তিনটি পর্ব রয়েছে। এর নায়ক এজিদ।
  3. বসন্তকুমারী নাটক – বাংলা সাহিত্যে মুসলিম সাহিত্যিক রচিত প্রথম নাটক, নাটকটি তিনি নওয়াব আবদুল লতিফকে উৎসর্গ করেন। মীর মশাররফ হোসেনেরও এটি প্রথম নাটক। এটি একটি সার্থক নাটক।
  4. রত্নাবতী বাঙালি মুসলমান রচিত প্রথম উপম্যাস।
  5. মুসলমান চরিত্র অবলম্বনে রচিত প্রথম নাটক- জমিদার দর্পণ।
  6. গাজী মিয়াঁর বস্তানী একটি ব্যঙ্গ রসাত্মক উপন্যাস। এটি লেখকের কর্মজীবন নির্ভর আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস। এখানে তিনি সমাজের বিভিন্ন ত্রুটি বিচ্যূতির উল্লেখ করেছেন।

পত্রিকা ও সম্পাদনা

তিনি প্রথম জীবনে কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’ (১৮৬৩) ও কবি ঈশ্বরগুপ্তের ‘সংবাদ প্রভাকর’ (১৮৩১) পতিকায় টুকিটাকি সংবাদ প্রেরণ করতেন। এই সুবাদে কাঙাল হরিনাথের সঙ্গে তার হৃদ্যতা গড়ে উঠেছিল যা আমৃত্যু বহাল থাকে। এ কারণেই তাকে কাঙাল হরিনাথের সাহিত্যশিষ্য বলা হয়। ১৮৯০ সালে তিনি পুনরায় লাহিনীপাড়া থেকে ‘হিতকরী’ নামে একখানি পাক্ষিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। এ পত্রিকার কোথাও সম্পাদকের নাম ছিল না। ‘হিতকরীর’ কয়েকটি সংখ্যা টাঙ্গাইল থেকেও প্রকাশিত হয়েছিল। এ পত্রিকার সহকারী সম্পাদক ছিলেন কুষ্টিয়ার বিখ্যাত উকিল রাইচরণ দাস। সাংবাদিকতা তার জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল। আর এ কারণে তিনি সৃজনশীল লেখালেখিতে মনোযোগ দেন। মশাররফ আজিজননেহার (১৮৭৪) ও হিতকরী (১৮৯০) নামে দুটি পত্রিকাও সম্পাদনা করেন।

মীর মশাররফ হোসেনের উক্তি ও উদ্ধৃতি
মাতৃভাষায় যাহার ভক্তি নাই সে মানুষ নহে (৩৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি)

Add a Comment