BCS-Solution

কাজী মোতাহার হোসেন

কাজী মোতাহার হোসেন (৩০ জুলাই ১৮৯৭ – ৯ অক্টোবর ১৯৮১) একজন বাংলাদেশী পরিসংখ্যানবিদ, বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ।

১৯২১ সালে ঢাকা কলেজে ছাত্র থাকাকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ডেমনেস্ট্রেটর হিসেবে চাকরি শুরু করেন এবং একই বিভাগে ১৯২৩ সালে একজন সহকারী প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান। কাজী মোতাহার হোসেনের নিজ উদ্যোগে ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যানে এম.এ কোর্স চালু হয় এবং তিনি এই নতুন বিভাগে যোগ দেন। তিনি গণিত বিভাগেও ১৯৪৯ থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন।

অসাম্প্রদায়িক ধ্যান-ধারণায় বিশ্বাসী এবং সেই আলোকে দেশের শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির সুদৃঢ় ভিত গড়ে তোলার জন্য তিনি লেখনী পরিচালনা করেন। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শিক্ষার সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালুর দাবীতে পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে পূর্ব বাংলায় যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল তিনি ছিলেন তার একজন দৃঢ় পৃষ্ঠপোষক। বক্তৃতা, বিবৃতি ও প্রবন্ধাদি প্রকাশ করে এ-সব আন্দোলনে গতিদান করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের ৬-দফাকে কেন্দ্র করে ষাটের দশকে পূর্ব বাংলায় বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের যে আন্দোলন সংঘটিত হয় তারও একজন বলিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন কাজী মোতাহার।

১৯৬১ সালে প্রতিক্রিয়াশীল বুদ্ধিজীবীদের বিরোধিতার মুখে ঢাকায় রবীন্দ্র-জন্মশত বার্ষিকী পালনে সাহসী ভূমিকা পালন করেন তিনি। ১৯৬৭ সালে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী বাঙালি-সংস্কৃতি খর্ব করার জন্য রেডিও-টেলিভিশন থেকে রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রচার বন্ধের যে পদক্ষেপ নিয়েছিল তার বিরুদ্ধেও প্রতিবাদজ্ঞাপন করেন।

তিনি বাংলা বানান ও লিপি সংস্কার কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৫৭ সালে মাওলানা ভাসানী আয়োজিত কাগমারী সাংস্কৃতিক সম্মেলনে সভাপতি হন। ব্যক্তিগত জীবনে কাজী নজরুল ইসলামের অন্তরঙ্গ বন্ধু ছিলেন। নজরুল তাঁর মোতাহার নামকে আদর করে ‘মোতিহার’ ডাকতেন।

Exit mobile version