বাংলা গদ্যের উদ্ভব ও বিকাশ

১৮০০ সালে কলকাতার লালবাজারে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পরের বছর কলেজটিতে বাংলা বিভাগ চালু করা হয়। বাংলা বিভাগে নিযুক্ত সকল পণ্ডিতই বাংলা গদ্যের উদ্ভব ও বিকাশে বিশেষ অবদান রাখেন। যদিও বাংলা বিভাগের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইংরেজদের বাংলা শিক্ষা দেওয়া।

উক্ত কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক উইলিয়াম কেরি ‘কথোপকথন’ নামে একটি গ্রন্থ প্রণয়ন করেন। ১৮০১ সালে প্রকাশিত ব্যাকরণ ও শব্দকোষ বিষয়ক এ গ্রন্থটি ছিল বাংলা ভাষার প্রথম মুদ্রিত গ্রন্থ। একই সালে কেরি সাহেবের মুন্সি নামে পরিচিত রামরাম বসু ‘রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র’ নামক গ্রন্থ রচনা করেন। কোন বাঙালির লেখা প্রথম মুদ্রিত গ্রন্থ এটি। এর পরের বছর অর্থাৎ ১৮০২ সালে রামরাম বসু বাংলা সাহিত্যের প্রথম পত্র সাহিত্য ‘লিপিমালা’ রচনা করেন।

১৮৩১ সালে ‘খাঁটি বাঙালি কবি’ ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের সম্পাদনায় ‘সংবাদ প্রভাকর‘ প্রকাশিত হয়। , রাজা রামমোহন রায় ১৮৩৩ সালে তার গৌড়ীয় ব্যাকরণ প্রকাশ করেন। রামমোহন রায়ই প্রথম ব্যক্তি যিনি পাঠ্যপুস্তুকের বাইরে সর্বপ্রথম বাংলা গদ্যরিতির ব্যবহার করেন। ১৮৪৯-১৮৫০ সালে মদন মোহন তর্কালঙ্কার বহুল পঠিত ‘শিশু শিক্ষা’ সংকলন করেন। যা বাঙালির ঘরে ঘরে প্রত্যেকটি ছেলেমেয়েরা উচ্চ শব্দে পাঠ করেছে। এর পর ১৮৯১ সাল পর্যন্ত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অসামান্য অবদান বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে। তাই বলা যায় গোটা ঊনবিংশ শতাব্দীই ছিল বাংলা গদ্য সাহিত্যের উৎপত্তিকাল। (১৮তম বিসিএস প্রিলিমিনারি)

Add a Comment