মৈমনসিংহ গীতিকা

বিগত সালের BCS Preliminary- তে এখান থেকে প্রশ্ন এসেছে 2 টি।

মৈমনসিংহ গীতিকা ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রাচীন পালাগানের সংকলন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দীনেশচন্দ্র সেন বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা থেকে স্থানীয় সংগ্রাহকদের সহায়তায় প্রচলিত এ পালাগানগুলো সংগ্রহ ও সম্পাদনা করে মৈমনসিংহ গীতিকা (১৯২৩) নামে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেন। গ্রন্থটি বিষয়মাহাত্ম্য ও শিল্পগুণে শিক্ষিত মানুষেরও মন জয় করে।

মৈমনসিংহ গীতিকায় অন্তর্ভুক্ত পালা সমূহ

  1. মহুয়া (রচয়িতা দ্বিজ কানাই (২৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি) ) রচনাকাল-১৬৫০ সালের দিকে বলে ধারণা করা হয়। এর প্রধান চরিত্রনদের চাঁদ, মহুয়া, হুমরা বেদে। এটি বিয়োগাত্মক প্রেমকথন।
  2. চন্দ্রাবতী (রচয়িতা নয়নচাঁদ ঘোষ)
  3. কমলা (রচয়িতা দ্বিজ ঈশান)
  4. দেওয়ানা মদিনা (রচয়িতা মনসুর বয়াতী) এর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য চরিত্র হল আলাল,দুলাল,মদিনা,সোনাফর।
  5. দস্যু কেনারামের পালা (রচয়িতা চন্দ্রাবতী)
  6. কঙ্ক ও লীলা (দামোদর দাস, রঘুসুর, শ্রীনাথ বেনিয়া এবং নয়ানচাঁদ ঘোষ প্রণীত)
  7. মলুয়া (এই পালাটির সূচনাতে মহিলা কবি চন্দ্রাবতীর একটি বন্দনা রয়েছে বলে এর রচয়িতা হিসেবে চন্দ্রাবতীকে মনে করা হয়)
  8. দেওয়ান ভাবনা (চন্দ্রাবতী প্রণীত)
  9. কাজলরেখা- জানা যায় নি।
  10. রূপবতী- জানা যায় নি।

মৈমনসিংহ গীতিকা প্রকাশিত ও সমাদৃত হওয়ার পরে দীনেশচন্দ্র সেন ময়মনসিংহ, নোয়াখালি, চট্টগ্রাম প্রভৃতি অঞ্চল থেকে আরও অনেক গীতিকা সংগ্রহ ও সম্পাদনা করে পূর্ববঙ্গ গীতিকা (১৯২৬) নামে মোট তিন খন্ডে প্রকাশ করেন। স্থানীয় গ্রামের মানুষ এগুলিকে ‘পালাগান’ নামে অভিহিত করে থাকে। দীনেশচন্দ্র সেন ইংরেজি ballad-এর বাংলা পরিভাষা হিসেবে ‘গীতিকা’ শব্দটি গ্রহণ করেন। (২৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি) বাংলা গীতিকা বর্ণনামূলক গীতি-আলেখ্য; তবে এতে প্রচুর নাটকীয় ঘটনার এবং চরিত্রের উক্তি-প্রত্যুক্তিমূলক সংলাপেরও স্থান আছে। একজন গায়েন আনুপূর্বিক ঘটনার বিবরণ ও চরিত্রের উক্তি-প্রত্যুক্তি গান করে পরিবেশন করেন; দোহাররা ধুয়া গেয়ে এবং বাজনদাররা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে তাঁকে সাহায্য করে। গ্রামের সাধারণ মানুষ এর দর্শক-শ্রোতা; তারা আসরে বসে মুগ্ধচিত্তে গীতিকার গীতিরস ও নাট্যরস উপভোগ করে।

  • চন্দ্রকুমার দে এবং দীনেশচন্দ্র সেনের নাম কেন লোকসাহিত্য প্রেমীর হৃদয়ে চিরদিন জেগে থাকবে? (৩৮তম বিসিএস লিখিত)

Add a Comment