সাক্ষীগোপাল

পুরীর সন্নিকটে সমুদ্রতীরে সাক্ষীগোপাল কৃষ্ণের মূর্তি ও মন্দির। কীসের সাক্ষ্য দেবার সাক্ষ্যবহন করছে এই মূর্তি? তার পিছনে রয়েছে এক লোককথা। পুরীতে তীর্থ করতে এসে এক প্রৌঢ় বিপ্র গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁর সঙ্গী এক তরুণ বিপ্র শুশ্রূষায় তাঁকে বাঁচিয়ে তুললেন। কৃতজ্ঞ প্রৌঢ় তাঁর কন্যার সঙ্গে তরুণ বিপ্রের বিবাহ দেবেন বলে প্রতিজ্ঞা করলেন। গ্রামে ফিরে কিন্তু ভুলে গেলেন প্রতিজ্ঞার কথা। শ্রীক্ষেত্রে উচ্চারিত প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ হলে প্রৌঢ় অভিশাপগ্রস্ত হবেন, তাই তরুণ বিপ্র তাঁকে প্রতিজ্ঞার কথা মনে করিয়ে দিতে প্রৌঢ় বললেন তাঁর এই প্রতিজ্ঞা দেবার সাক্ষী আনতে পারলেই তিনি বিবাহ দেবেন। তরুণ বিপ্র জগন্নাথকে অনুনয় করল সাক্ষী হিসাবে তার সঙ্গে গ্রামে যেতে। জগন্নাথদেব রাজি হলেন এক শর্তে: তিনি তরুণ বিপ্রের পিছু পিছু যাবেন, কিন্তু সে পিছন ফিরে দেখলেই তিনি থেমে যাবেন। তরুণ প্রশ্ন করল কী করে সে বুঝবে যে জগন্নাথ তাঁকে অনুসরণ করছেন। জগন্নাথ জানালেন তাঁর চরণের নূপুরধ্বনিতেই সেটা বোঝা যাবে। যাত্রা শুরু হল। পথ চলতে চলতে নটখট নটবর কৃষ্ণের মাথায় দুষ্টুমি চাপল। কয়েক লহমার জন্যে নূপুর চেপে ধরলেন। নূপুরের আওয়াজ না শুনে আতঙ্কিত তরুণ বিপ্র পিছনে ফিরে তাকালেন। কৃষ্ণ সেখানেই দাঁড়িয়ে গেলেন। কোন অঘটন সামনে ঘটতে দেখেও যে নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকে তার জন্যেই এই সাক্ষীগোপাল বিশেষণ।

Add a Comment