য-ফলা
|কিছু কিছু বিশেষণ শব্দকে বিশেষ্য পদে পরিণত করতে হলে শব্দের শেষে য-ফলা যোগ করতে হয়। আর এসব বিশেষ্যের সাথে কখনও ‘তা’ যুক্তা করা যায় না। তবে বিশেষণের সাথে ‘তা’ যুক্ত করা যেতে পারে। ‘তা’ যুক্ত বিশেষণটি তখন বিশেষ্য হবে।
যেমন-
দরিদ্র(বিশেষণ)- দরিদ্রতা(বিশেষ্য) – দারিদ্র্য(বিশেষ্য)
বিচিত্র(বিশেষণ)-বিচিত্রতা(বিশেষ্য)- বৈচিত্র্য (বিশেষ্য)
যেহেতু দারিদ্র্য, বৈচিত্র্য ইত্যাদি নিজেই বিশেষ্য, তাই এদেরকে আবার ‘তা’ যোগ করলে বানানে বাহুল্য ঘটবে। এই ধরনের বিশেষণ থেকে বিশেষ্য গঠনে আদিস্বরে পরিবর্তন ঘটে। বা অন্যস্বরের আগমন ঘটে। কেন এরকম ঘটে তা জানতে ব্যাকরণের গুণ ও বৃদ্ধির নিয়ম জানতে হবে।
অনুরূপ নিয়ম প্রযোজ্য হয়-
অধিক – আধিক্য
অলস – আলস্য
উজ্জ্বল – ঐজ্জ্বল্য
উদাসীন-ঔদাসীন্য
উদ্ধত(উত্ + √ হন্ + ত)- ঔদ্ধত্য
একমত-ঐকমত্য
কৃপণ – কার্পণ্য
গণ- গণ্য(গণ=গণনা করা, গণ্য=গণনার যোগ্য)
গুণ – গুণ্য (ধর্ম, প্রকৃতি বা অংকের গুণ করা)( কিন্তু গুন= চট সেলাই করার বড় ছুঁচ, অথবা গুন-গুন করে গান করা)
ঘৃণা – ঘৃণ্য
চঞ্চল – চাঞ্চল্য
চপল – চাপল্য
দূরত্ব(ত+ব) – দৌরাত্ম্য(ত+ম)
দ্বিবিধ- দৈবিধ্য
ধন – ধান্য
নিকট – নৈকট্য
প্রগল্ভ – প্রাগল্ভ্য
বিচিত্র – বৈচিত্র্য
মহৎ – মাহাত্ম্য
সমঞ্জস – সামঞ্জস্য
সমর্থ – সামর্থ্য
সুস্থ- স্বাস্থ্য
স্বচ্ছন্দ- স্বাচ্ছন্দ্য
স্বতন্ত্র – স্বাতন্ত্র্য
সুজন- সৌজন্য (১১তম বিসিএস প্রিলিমিনারি)
য-ফলা না এসে ‘য’ অবিকৃত থাকে যে সব ক্ষেত্রে
প্রখর+ য(ষ্যঞ্)= প্রাখর্য
সুন্দর+য(ষ্যঞ্)= সৌন্দর্য
ঈশ্বর+য(ষ্যঞ্)= ঐশ্বর্য
সন্ধির নিয়ম
সন্ধির নিয়মে কিছু ক্ষেত্রে য-ফলা আসে যা আমরা প্রায়ই লিখি না, সন্ধিতে ই এর পর, ই ব্যতিত অন্য যে কোন স্বরধ্বনি থাকলে তা য-ফলা হয়। , তাই
ত্রি+অহন্+স্পর্শ =’ত্রহস্পর্শ’ লেখা যাবে না। ই+অ=য-ফলা নিয়মে সঠিক হবে ‘ত্র্যহস্পর্শ’ । এক দিনে (চন্দ্রের) তিন তিথীর যোগকে ত্র্যহস্পর্শ বলে।
অনুরূপভাবে-
নি+ √উজ্+অ(ঘঞ্) = ন্যুব্জ(উচ্চারণ নুব্জো) । প্রথমের ই+উ= য-ফলা, এবং পরের উ+অ=ব।
নি+√ঊন্+অ(অচ্) = ন্যূন( উচ্চারণ নুনো)
অধি+অক্ষ = অধ্যক্ষ( অধ্যাক্ষ নয়)
অধি+√ই+অন(ল্যুট)= অধ্যয়ন
কিন্তু, অধি+√ই+নিচ্+অক(ণ্বুল) = অধ্যাপক। অনুরূপে অধ্যাপন ও অধ্যাপনা।
প্রত্যয়ের পার্থক্যের কারণে একটিতে আ-কার আসে।
অধি+অব+√সো+অ(ঘঞ্)= অধ্যবসায়। অধ্যাবসায় নয়। (৩০তম বিসিএস লিখিত)
অধি+অশন= অধ্যশন(=অতিভোজন)
অধি+√বস্+ত(ক্ত) =অধ্যুষিত
অধ্যাত্ম (বিণ) অধি+আত্মন্+অ(টচ্)
অধ্যাত্মিক ও আধ্যাত্মিক (দুটোই বিশেষণ)। অধ্যাত্ম+ইক(ঠঞ্)