একই শব্দের ভিন্নার্থে প্রয়োগ – ৫

চাল
ঘরের ছাদ অর্থে – ফুটো চাল দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে।
আচার অর্থে – ব্যবহার অর্থে – তার চাল অর্থে – চলন মোটেই ভালো নয়।
মতলব অর্থে – সেলিম খুব গভীর জলের মাছ, তার চাল বোঝা কঠিন।
আড়ম্বর অর্থে – রহিমের বাইরেই যত চাল, ভেতরে একেবারেই ফাঁপা।
ঘর অর্থে – সংসার অর্থে – চাল অর্থে – চুলোর ঠিক নেই, তোমাকে মেয়ে দেবে কে?
চাউল অর্থে – চাউলের দাম তেমন কমেনি।
ঘরের ছাদ অর্থে – টর্নেডোতে বহুঘরের চাল উড়ে গেছে।
ব্যবহার অর্থে – তাঁর চালচলন দেখেই বোঝা যায়, তিনি বনেদি ঘরের সন্তান।
অহঙ্কার অর্থে – খুব হয়েছে, আর বনেদি চাল দেখিও না।

চোখ
আঁখি অর্থে – আমরা চোখ দিয়ে দেখি।
দৃষ্টি অর্থে – পুলিশের চোখ আসামির দিকে।
ফাঁকি অর্থে – চোরটি পুলিশের চোখ এড়িয়ে পালিয়ে গেল।
রোগ অর্থে – রফিকের চোখ উঠেছে বলে ভীষণ কষ্টে আছে।
ভয় দেখানো অর্থে – আমাকে চোখ রাঙিয়ে লাভ হবে।
লজ্জা অর্থে – তোমার চোখের চামড়া থাকলে আর আমার সামনে আসতে না।
দৃষ্টি রাখা অর্থে – ছেলেটির ওপর চোখ রেখো।
সতর্ক হওয়া অর্থে – যা দিনকাল পড়েছে চোখ খোলা রাখা ছাড়া উপায় নেই।
রাগ দেখানো অর্থে – আমাকে চোখ রাঙ্গিয়ে লাভ নেই।
চক্ষুশূল অর্থে – মেয়েটি সৎমার চোখের বালি।
বুদ্ধি হওয়া অর্থে – যাক কর্তাবাবুর চোখ তাহলে এতদিনে খুলেছে।

ছল
দোষ অর্থে – কথার ছল ধরাটা তার পুরনো অভ্যাস।
ছলনা অর্থে – তোমার এ ছলচাতুরী একদিন ধরা পড়ে যাবে।
কপট অর্থে – সে যে এত বড় ছল, তা অগে জানতাম না।
প্রসঙ্গ অর্থে – কিছু মনে করে না, এমনি কথাচ্ছলে একথা বললাম।
উদ্দেশ্য অর্থে – গুপ্তচরটি কোন না কোন ছলে ফকির সেজেছে।

ছাড়া
ত্যাগ অর্থে – তার মতো সংসার ছাড়া লোক আমি আর দেখিনি।
মুক্তি অর্থে – মাসুম আজই জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে।
শ্রীহীন অর্থে – লক্ষ্মীছাড়া সংসারে ভালো কিছু চিন্তা করাই ভুল।
উচ্চস্বরে অর্থে – গান শিখতে হলে ছাড়া গলায় প্রতিদিন রেওয়াজ করতে হবে।
ব্যতীত অর্থে – সত্যের পথ ছাড়া মুক্তি নেই।
থামা অর্থে – তিন দিন পর তার জ্বর ছেড়েছে।
যাত্রা করা অর্থে – খুব ভোরেই সিলেটের উদ্দেশ্যে পারাবত ট্রেনটি ছাড়ে।
নিরাশ হওয়া অর্থে – ওর ব্যাপারে আমি হাল ছেড়ে দিয়েছি।
ডাকে দেওয়া অর্থে – গতকাল চিঠিটা ছাড়া হয়েছে।

ছোট
কনিষ্ঠ অর্থে – রবিন আমার ছোট ভাই।
নীচ অর্থে – তোমার মতো ছোট মনের মানুষ আমি আর দুটো দেখিনি।
হীন অর্থে – ছোট কাজ বলে কিছু নেই।
বিনীত অর্থে – বড়ো যদি হতে চাও, ছোট হও তবে।
হেয় করা অর্থে – জাতের কথা বলে কাউকে ছোট করা ঠিক না।
ক্ষুদ্র অর্থে – ‘আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে।’
অনধিকার চর্চা অর্থে – ছোটমুখে বড় কথা মানায় না।

জোর
উদাত্ত অর্থে – তিনি জোর গলায় ঘেষণা করলেন যে, তিনি সব সময় আমাদের পাশে থাকবেন।
শক্তি অর্থে – জোর যার মুল্লুক তার।
জবরদস্তি অর্থে – মামুনের দোকান থেকে চাঁদাবাজরা জোর করে পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়ে গেল।
আস্ফালন অর্থে – গলার জোর দেখাও কেন? তোমাকে আমি ডরাই নাকি।
দ্রুত অর্থে – জোর কদম, চলরে চল।

Add a Comment