বিশ্ব ব্যাংক

১৯৪৫ সালে বিশ্ব ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি দুটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে গঠিত
1. International Bank for Reconstruction and Development.(IBRD)
2. International Development Association(IDA)

তবে নিম্নোক্ত পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে World Bank Group বলা হয়।
1. International Bank for Reconstruction and Development.(IBRD)
2. International Development Association(IDA)
3. International Finance Corporation(IFC)
4. Multilateral Investment Guarantee Agency(MIGA)
5. International Center for Settlement of Investment Disputes(ICSID)

ইতিহাস
১৯৪৪ সাকে ব্রেটন উডস কনফারেন্সের মাধ্যমে পরের বছরে সৃষ্টি হয় বিশ্ব ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল(IMF). ব্রেটন উডস কনফারেন্সে অনেক দেশ উপস্থিত থাকলে মুখ্য ভূমিকা পালন করে US ও UK. এর প্রাথমিক লক্ষ ছিল নিম্ন আয়ের দেশগুলোকে ঋণ প্রদান। যারা বেশি সুদের বাণিজ্যিক ঋণ নিতে পারে না। ফ্রান্স প্রথম দেশ হিসাবে বিশ্বব্যাংক থেকে ঋণ গহণ করে।

উদ্দেশ্য
ঋণ প্রদান প্রধান উদ্দেশ্য, বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো কে
দরিদ্র বিমোচন
বিদেশি বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রসার

উন্নয়নমূলক কর্মসুচি
বিশ্ব ব্যাংকের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি MDG অর্জনে সহায়তা করেছে। যেমন –
অতি দরিদ্র ও ক্ষুধা নির্মূল করা ।
সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা।
জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করা
শিশু মৃত্যু হার কমানো
HIV/AIDS, ম্যালেরিয়া ও অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে কাজ করা।
পরিবেশ রক্ষা করা
বিশ্ব ব্যাপী অংশীদারিত্ব মূলক উন্নয়নে কাজে


পরিচালনা

প্রথাগতভাবে বিশ্ব ব্যাংকের পরিচালক হন একজন ইউএস। কিন্তু বিগত বারাক ওবামার সময়ে ইউএস (দক্ষিণ) কোরিয়ান-আমেরিকান, জিম ইয়ং কিম এর নাম প্রস্তাব করায়, তিনি বর্তমানে বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে IMF এর প্রধান হবেন একজন ইউরোপিয়ান। বিশ্ব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের (The Boards Of Directors) ২৫ জন সদস্য আছেন। প্রেসিডেন্ট বাদে বাকি থাকেন ২৪ জন। এ ২৪ জনের মধ্যে পাঁচজনকে নির্বাচন করে পাঁচটি বৃহৎ চাঁদা প্রদানকারী দেশ। যথা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, জার্মান ও ফ্রান্স। অবশিষ্ট ১৯ জনকে নিয়োগ দেন সদস্যরাষ্ট্রগুলো।

সদস্য
International Bank for Reconstruction and Development(IBRD) এর সদস্য সংখ্যা ১৮৯ জন। প্রত্যেক IBRD এর সদস্যই আবার IMF এর সদস্য। কোন দেশ IBRD এর সদস্য না হলে। সে World Bank Group এর অন্যান্য প্রতিষ্টানের সদস্য হতে পারে না।

ভোটদানের ক্ষমতা
বিশ্বব্যাংক এর সকল সদস্য রাষ্ট্রের ভোট প্রদানের ক্ষমতা সমান নয়। এটি নির্ধারিত হয় কোন দেশ কি পরিমাণ চাঁদা দেয় তা উপর। যেমন United States (15.85%), Japan (6.84%), China (4.42%), Germany (4.00%), the United Kingdom (3.75%), France (3.75%), India (2.91%),[30] Russia (2.77%), Saudi Arabia (2.77%) and Italy (2.64%).

কার্যাবলি
– স্বল্প সুদে ঋণ দান
– ক্ষেত্রে বিশেষে অনুদান দেওয়া
– উন্নয়ন কাজে সহায়তা প্রদান
– কারিগরি কাজে সহায়তা
– বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থায়ন
– আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে দীর্ঘমেয়াদী ভারসম্য রক্ষা করা
– জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন
– কৃষি সহায়তা ও উৎপাদন বৃদ্ধি
– সুশাসন নিশ্চিত করা, দুর্নীতি দূর করা
– পরিবেশ রক্ষা করা
– সদস্য রাষ্ট্রদের প্রধান প্রধান কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান
– অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে সমন্বয় করে কাজ করা
– বাজেটের ৩% অর্থনৈতিক ও সামাজিক গবেষণার কাজে ব্যায় করে।
খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচি, দুর্যোগকালীন খাদ্য সহায়তা, কৃষিখাতে ব্যয় বরাদ্দ সহ বিভিন্ন পুষ্টি কার্যক্রম

ঋণদান নীতি
যদিও ঋণদানের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের নীতি বিতর্কিত তারপর নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে ঋণ দিয়ে থাকে।
২৫% ঋণ দেয় শক্তি উৎপাদনে
৩০% যোগাযোগের ক্ষেত্রে
৩০% শিল্প উন্নয়নে
১২% কৃষি
ব্যাংক নিজস্ব সম্পদ, সদস্য রাষ্ট্রদ কর্তৃক প্রদত্ত চাঁদা, ও অন্যান্য খাত থেকে সংগৃহীত অর্থ থেকে সরাসরি ঋণ দেয়। যে সব দেশের মাথাপিছু আয় ৮০০ ডলারের উপরে তাদেরকে ৭% সুদের ঋণ দেয়। যাঁদের ৮০০ এর নিচে তাদেরকে বিনাসুদে ঋণ দেয়। তবে সেক্ষেত্রে ০.৭৫% সার্ভিস চার্জ নেয়। ঋণ দেওয়ার আগে অনেক কিছু বিবেচনা করে যেমন, প্রকল্পটি উৎপাদন মুখী কি না, প্রকল্পের যতার্থতা, লাভজনক কি না, উক্ত দেশ, ঋণ শোধ করতে পারবে কি না।

অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জ
অর্থনীতিতে এই মুহূর্তে পাঁচ ধরনের চ্যালেঞ্জ আছে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। এগুলো হলো
ব্যাংকিং খাতে তদারকি বৃদ্ধি,
আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়,
সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানো,
মুদ্রা বিনিময় হার সমন্বয় করা এবং
চালের দাম কমাতে আমদানি শুল্ক কমানো।

বিতর্ক
কিছু বেসরকারি সংস্থা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ খোদ বিশ্ব ব্যাংকের কিছু প্রধান অর্থনীতিবিদ বিশ্ব ব্যাংকের সমালোচনা করেছেন। তারা মনে করেন বিশ্ব ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থা মূল্যস্ফিতি বর্ধক ও বিশ্ব বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণে কিছু রাষ্ট্রের আধিপত্য বাড়াচ্ছে। তাঁরা আরও মনেকরেন যে বিশ্ব ব্যাংকের তথাকথির মুক্ত বাজারের ধারণা অনেক সময় অর্থনৈতিক উন্নয়নে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে, যদি তা খুব দ্রুত বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করা হয়। খুব বড় বিতর্ক এর পরিচালনা পর্ষদকে নিয়ে। যদিও বিশ্বের ১৮৯ টি দেশ এর সদস্য কিন্তু কতিপয় সদস্য রাষ্ট্র এর অভিভাবকের ভূমিকায় রয়েছে। তাই অনেকে এটিকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক’ বলে অভিহিত করেন। এতে রয়েছে অসম ভোটিং ক্ষমতা।

বিশ্ব ব্যাংকের ভূমিকা আফ্রিকার ধনীদেশগুলো আরো ধনী, এবং গরিব দেশগুলোদে আরো গরিবে পরিণত করছে।
অনেক সময় এ ব্যাংককে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে।
প্রয়জনের তুলনায় অল্প ঋন
ঋণের উচ্চ সুদ
ঋণ গ্রহীতা রাষ্টের অভ্যন্তরীন বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ

Add a Comment