বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান

জন্ম ও পরিচয়
১৯৪১ সালের ২৯ অক্টোবর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন বাংলার অকুতোভয় সন্তান মতিউর রহমান। তাঁর পিতা আব্দুস সামাদ এবং মাতা মোবারকুন্নেসা খাতুন। তাঁর পৈত্রিক নিবাস নরসিংদী।

কর্ম জীবন
১৯৬১ সালের ১৫ আগস্ট তিনি পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে ক্যাডেট হিসেবে নিয়োজিত হন। বিমানবাহিনীতে যোগদানের সময় তাঁর আইডি নম্বর ছিলো ৪৩৬৭। ১৯৬৩ সালে তিনি পাইলট অফিসার হিসেবে কমিশন পান এবং ১৯৬৭ সালে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পদোন্নতি পান। বিভিন্ন প্রশিক্ষণে মেধার পরিচয় রাখায় পাকিস্তান সরকার তাঁকে ১৯৬৭ সালের ৪ অক্টোবর ‘সিতারা-এ-হরব’ পদবিতে ভূষিত করে।

তাঁর স্ত্রী মিলি রহমান এবং তাঁদের দুই কণ্যা মাহিন ও তুহিন।

মুক্তিযুদ্ধ
মতিউর রহমান টি-৩৩ যুদ্ধবিমান নিয়ে ১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট পালিয়ে আসার চেষ্টা করেন। বিমানটির সাংকেতিক বা ছদ্মনাম ব্লু-বার্ড ১৬৬। মতিউর রহমান পালিয়ে যাওয়ার সময় দুইটি এফ-৮৬ জঙ্গী বিমান উড়ে যায় তাঁর খোঁজে। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য পাকিস্তানের করাচির মৌরিপুর বিমানঘাঁটি থেকে টি-৩৩ প্রশিক্ষণ বিমান নিয়ে পালিয়ে আসার সময় পাকিস্তানি প্রশিক্ষণরত পাইলট রশিদ মিনহাজের বাঁধা প্রদানে বিমানটি ভারতীয় সীমান্তের বিন্দা গ্রামের পাশে থাট্টায় বিধ্বস্ত হয়।

মতিউর রহমানকে নিয়ে তৈরি চলচ্চিত্র ‘অস্তিত্বে আমার দেশ’
বড় অবহেলায় করাচির মাশরুর বিমানঘাঁটির চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হয়। পরবর্তীতে, পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইট (বিজি-০২৪) বাঙালি জাতির এই বীর সেনানির দেহাবশেষ নিয়ে ঢাকা বিমানবন্দরের মাটি স্পর্শ করে, ২০০৬ সালের ২৪ জুন শনিবার রাত ১০টা ২৮ মিনিটে। তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানের ত্যাগ আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে যাবো।

Add a Comment