জাতীয় সংসদের ক্ষমতা ও কার্যাবলি

জাতীয় সংসদের ক্ষমতা ও কার্যাবলিকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
১. আইন প্রণয়ন
২. অর্থ সংক্রান্ত ও
৩. শাসন বিভাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা।

১. আইন প্রণয়ন ক্ষমতা: দেশের জন্য আইন প্রণয়নের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের ওপর ন্যত। সংসদ যেকোনাে নতুন আইন প্রণয়ন এবং প্রচলিত আইনের পরিবর্তন বা সংশােধন করতে পারে। আইন প্রণয়ন বিলের মাধ্যমে হয়। সংসদ কর্তৃক গৃহীত বিল রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য পেশ করা হয়। জাতীয় সংসদ আইন প্রণয়নের ব্যাপারে চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী। জাতীয় সংসদ সংবিধান মােতাবেক সংবিধানের সংশােধন, পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করতে পারে।

২. অর্থ সংক্রান্ত ক্ষমতা: সংসদের অনুমতি ব্যতীত কোনাে প্রকার কর আরােপ বা সংগ্রহ করা যাবে না। সংসদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হল বার্ষিক বাজেট পাস করা ।

৩. শাসন বিভাগের উপর নিয়ন্ত্রণ: জাতীয় সংসদ বিভিন্নভাবে শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রিসভা একক ও যৌথভাবে জাতীয় সংসদের নিকট তাদের কাজের জন্য দায়ী থাকেন। সংসদ অনাস্থা জ্ঞাপন করলে প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগ করতে হয়। সংসদ নানা বিষয়ে প্রশ্ন করে, বাজেটের ওপর আলােচনা সমালােচনা করে এবং অনাস্থা প্রস্তাবের দ্বারা শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে। জাতীয় সংসদ বাংলাদেশের স্থল, বিমান ও নৌ বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করে। সংসদের সম্মতি ব্যতীত যুদ্ধ ঘােষণা বা কোনাে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা যায় না। রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা ঘােষণা করলে তা সংসদে উত্থাপন করে বিধিসম্মত করতে হয়। সংবিধান লঙ্ঘন বা গুরুতর অসদাচরণের অভিযােগ থাকলে সংসদ রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসিত করতে পারে।

জাতীয় সংসদ এ সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকে। সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় আইনসভার প্রাধান্য সর্বত্র স্বীকৃত। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদও এর ব্যতিক্রম নয়।

Add a Comment