বিদ্যাপতি

  • বৈষ্ণব পদাবলি ধারায় বিদ্যাপতির বিশেষত্ব ব্যাখ্যা করুন । (৩৫তম বিসিএস লিখিত)

বৈষ্ণব পদাবলীর আদি ও অবাঙালি কবি বিদ্যাপদি ছিলেন মিথিলার রাজার সভা কবি। (৩৮তম বিসিএস প্রিলিমিনারি) তাঁকে “অভিনব জয়দেব” ও “মৈথিলির কোকিল” বলে ডাকা হয়। রাজা শিব সিঙ্ঘ তাঁকে “কবি কণ্ঠহার” উপাধি দেন। নব যৌবনা কিশোরী রাধার বয়ঃসন্ধি থেকে কৃষ্ণ বিরহের সুতীব্র আর্তি বর্ণনা বিদ্যাপতির কবিতার উপজীব্য। তাঁর পদাবলীর ভাব, ভাষা, চিত্ররূপ, অলংকার ও ছন্দ পরবর্তীকালের অনেক কবিকে প্রভাবিত করতে পেরেছে- আর এখানেই তার বিশেষত্ব।

বিদ্যাপতি বাংলা ভাষায় কোনও পদ রচনা করেননি। তিনি ব্রজবুলি ভাষায় পদ রচনা করেছেন। ব্রজবুলি ভাষা হল হিন্দি, বাংলা ও প্রাকৃত ভাষার মিশ্রণে এক কৃত্রিম কবি ভাষা। এটি মিথিলার একটি উপভাষা(Dialect)। উনিশ শতক পর্যন্ত এই ব্রজবুলিতে বৈষ্ণব পদ রচিত হয়।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কিছু গান যেমন-‘ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী’ বৈষ্ণব পদাবলী দ্বারা প্রভাবিত। এগুলি বেশিরভাগ ব্রজবুলি ভাষায় রচিত।এর মধ্যে বিখ্যাত- ‘মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান’,’গহন কুসুম কুঞ্জমাঝে’,’শাঙন গগনে ঘোর ঘনঘটা’ ইত্যাদি। এছাড়া-‘ওহে জীবন বল্লভ’, ‘মাঝে মাঝে তব দেখা পাই’, ‘নয়ন তোমারে পায়না দেখিতে’, ‘আমি জেনেশুনে তবু ভুলে আছি’ ইত্যাদি গানে বৈষ্ণব পদাবলীর ভাব পরিস্ফুট।

তখনকার দিনে মিথিলা ছিল শিক্ষা, শিল্প সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র। বাংলা ভাষী ছেলেমেয়েরা মথুরায় গিয়ে বিধ্যাপতির রচিত পদ আত্নস্থ করে বাংলায় ফিরে আসত। এভাবে বিধ্যাপতি হয়েছেন বাংলার কবি।
১.
তাঁর কয়েকটি বিখ্যাত উক্তি
“এ সখি হামারি দুখের নাহি ওর
এ ভরা বাদর মাহ ভাদর
শূন্য মন্দির মোর”
২.
“কি কহিব রে সখি আনন্দ ওর
চিরদিন মাধব মন্দিরে মোর”

Add a Comment