অপপ্রয়োগ
|* অত্র – এইখানে। তাই ‘অত্র বিদ্যালয়
কথাটি ভুল। যার অর্থ হয় ‘এইখানে বিদ্যালয়’।
* বন্দোপাধ্যায়
– শব্দটি ভুল। সঠিক ‘বন্দ্যোপাধ্যায়’= বন্দ্য+উপাধ্যায়।
* অসূর্যস্পশ্য
– শব্দটি ভুল। সঠিক অসূর্যম্পশ্য= ও+সূর্য+দৃশ+অ= সূর্যের মুখ পর্যন্ত দেখেনি এমন নারী অর্থাৎ অন্তঃপুরবাসিনী।
* আপোষ
– শব্দটি পারসি, তাই সঠিক বানান হবে ‘আপোস’।
* উপরোক্ত
– শব্দটির সঠিক রূপ হবে ‘উপরিউক্ত/উপর্যুক্ত।
* ইতিপূর্বে
– বিসর্গ সন্ধির নিয়মে শব্দটি হবে ইতঃপূর্বে।
* ইতিমধ্যে
– অ-ধ্বনির সঙ্গে বিসর্গ এবং পরে অ-ধ্বনি থাকলে বিসর্গ ও অ-ধ্বনি স্থলে ও-কার হয়। তাই সঠিক সব্দটি হবে ইতঃ+মধ্যে = ইতোমধ্যে।
* উল্লেখিত
– শব্দটি ভুল। কোথাও বা কখনও কোন কিছু উল্লেখ করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে ‘উল্লেখকৃত’। আর কোন ডকুমেন্টের উপরের দিকে কোন কিছু উল্লেখ করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে ‘উল্লিখিত’।
* এতদ্ + দ্বারা = এতদ্দ্বারা/এতদ্দ্বারা সন্ধির নিয়মে। (এতদ্বারা
অশুদ্ধ)।
* এমতাবস্থায়
– এভাবে ব্যবহার করলে বাহুল্য দোষ ঘটে। কেননা এখানে শব্দ আছে তিনটি ‘এই + মত + অহস্থায়’ তাই ‘এই অবস্থায়। বা এ মতে ব্যবহার যুক্তিযুক্ত।
* ছাত্রীবাস- কথাটি অর্থ ছাত্রীদের যাতায়াতের নিমিত্তে নিয়োজিত বাস। আবাস বুঝাতে ‘ছাত্রীনিবাস’ লিখতে হবে।
* গড্ডালিকা
প্রবাহ= সংস্কৃতে ‘গড্ডল’ মানে ভেরা। তাই সঠিক শব্দটি হবে ‘গড্ডলিকা প্রবাহ’।
* উৎকর্ষতা
= ‘উৎকর্ষ’ নিজেই বিশেষ্য তাই আবার ‘তা’ যোগ করে বিশেষ্য করার কি দরকার?
* সর্বজনীন- সকলের জন্য হিতকর, সার্বজনিন- সকলের জন্য যা প্রযোজ্য।
* মুক্তিযুদ্ধোত্তর শব্দটি সঠিক হলে স্বাধীনতাতোত্তর
ভুল, সঠিক হবে স্বাধীনতা উত্তর।
* প্রায় শতাধিক’ বা ‘প্রায় সহস্রাধিক’ এভাবে প্রয়োগ করলে বাহুল্য দোষ ঘটে। কেনন ‘প্রায়’ ও ‘অধিক’ উভয়ই অনুমান নির্ভর। তাই ‘প্রায় একশত’ বা শতাধিক’ ব্যবহার বাঞ্চনীয়।
* আয়ত্ত – অধিকার বা দখল, তাই স্বায়ত্তশাসন, করায়ত্ত, রাষ্ট্রায়ত্ত ইত্যাদি সঠিক। তবে ‘আয়ত্তাধীন
‘ বাহুল্য দোষ ঘটবে কেননা, ‘অধীন’ ও ‘আয়ত্ত’ একই শব্দ।
* বনজ বৃক্ষ মানে যদি হয় ‘বনে জন্মে যে গাছ’ তাহলে ‘ফলজ
বৃক্ষ’ মানে ‘ফলে জন্মে যে গাছ’! বিষয়টা কেমন হয়ে গেল? তাই দ্বিতীয়টি ভুল। এটা এভাবে লেখা যেতে পারে ‘ফল দেয় যে বৃক্ষ’- ফলদ বৃক্ষ। (‘বল’ দেওয়া বলদের মত)
* প্রাতঃরাশ
– সংস্কৃতে ‘প্রাতঃ’ মানে প্রভাত বা সকাল। ‘আশ’ মানে খাবার। এখানে র-জাত বিসর্গ হওয়ায় বিসর্গ লোপ পেয়ে ‘র’ ফিরে আসবে, ফলে সঠিক শব্দ হবে- প্রাতরাস।(প্রাতঃরাশ বা প্রাতআশ
‘ হবে না। )
* সেবা – বানানে ‘স’ হলে ও পরিষেবা বানানে ‘ষ’ হবে। কেননা পূর্বে ই-কার(রি) আছে।
* অধ্যবসায় – অধ্যাবসায়
নয়। কেননা [সং. অধি+অব+√সো+অ(ঘঞ)]
* অধ্যয়নঃ অধ্যায়ন
নয়। [সং অধি+√ই+অন(ল্যুট্)] কিন্তু নিচের বানানটি ও লক্ষ্য করুন-
* অধ্যাপকঃ অধ্যপক নয়। [সং অধি+√ই+ণিচ্+অক(ণ্বুল্)]
* অধ্যাপনাঃ অধ্যপনা নয়। [সং অধি+√ই+ণিচ্+অন(ল্যুট্) –> ণিচ্ প্রত্যয় দেখুন
অধ্যক্ষঃ অধি+অক্ষ
*বিবিধপ্রকার
– বাহুল্য দোষে দুষ্ট। ‘বিবিধ’ ও প্রকার সমার্থক, তাই যেকোন একটি ব্যবহার করতে হবে।
*কাহিনিঃ কিছু কিছু পত্রিকাতেও দেখা যায় বানানটি লিখেছে ‘কাহিনি’ তবে বাংলা অভিধানে আছে “কাহিনী” ।
*কথপোকথন
এটি ভুল। অনেক সংশায়াপূর্ণ একটি বানান। বানানটি সন্ধি বিচ্ছেদ দেখলে আর সমস্যা থাকার কথা নয়। কথা+উপকথন =কথোপকথন। অর্থাৎ আ+উ=ও হয়েছে।