সংস্কৃত স্বরসন্ধি

বিগত সালের BCS Plreliminary- তে এখান থেকে প্রশ্ন এসেছে টি।

স্বরসন্ধি স্বরধ্বনির সঙ্গে স্বরধ্বনির মিলনের নাম স্বরসন্ধি।
১. অ/আ + অ/আ = আঃ
অ-কার কিংবা আকারের পর অ-কার কিংবা আ-কার থাকলে উভয়ে মিলে আ-কার হয়, আ-কার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের সঙ্গে যুক্ত হয়। যেমন-

অ + অ = আ; নর+ অধম = নরাধম। এরূপ-হিমাচল, প্রাণাধিক, হস্তান্তর, হিতাহিত ইত্যাদি।
অ + আ = আ; হিম + আলয় = হিমালয়। এরূপ – দেবালয়, রত্নাকর (১০তম বিসিএস প্রিলিমিনারি) , সিংহাসন ইত্যাদি।
আ + অ = আ; যথা + অর্থ = যথার্থ। এরূপ — আশাতীত, কথামৃত, মহার্ঘ ইত্যাদি। আ + আ = আ; বিদ্যা+ আলয় = বিদ্যালয়। এরূপ- কারাগার, মহাশয়, সদানন্দ ইত্যাদি।

২. অ/আ + ই/ঈ = এঃ অ-কার কিংবা আ-কারের পর ই-কার কিংবা ঈ-কার থাকলে উভয়ে মিলে এ-কার হয়; এ-কার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের সঙ্গে যুক্ত হয়। যেমন—
অ + ই = এ; শুভ + ইচ্ছা = শুভেচ্ছা।
আ + ই = এ; যথা + ইষ্ট = যথেষ্ট।
অ + ঈ = এ; পরম + ঈশ =পরমেশ।
আ + ঈ = এ; মহা + ঈশ =মহেশ। এরূপ –পূর্ণেন্দু, শ্রবণেন্দ্রিয়, স্বেচ্ছা, নরেশ, রমেশ, নরেন্দ্র ইত্যাদি।

৩. অ/আ + উ/ঊঃ অ-কার কিংবা আ-কারের পর উ-কার কিংবা উ-কার থাকলে উভয়ে মিলে ও-কার হয়; ও-কার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনে যুক্ত হয়। যেমন—
অ + উ = ও; সূর্য + উদয় = সূর্যোদয়।
আ + উ = ও; যথা + উচিত = যথােচিত।
অ + উ = ও; গৃহ + উর্ধ্ব = গৃহাের্ধ্ব।
আ + উ = ও; গঙ্গা + ঊর্মি = গঙ্গোর্মি। এরূপ — নীলােৎপল, চলােৰ্মি, মহােৎসব, নবােঢ়া, ফলােদয়, যথােপযুক্ত, হিতােপদেশ, পরােপকার, প্রশ্নোত্তর ইত্যাদি।

৪. অ/আ+ঋ=অরঃ অ-কার কিংবা আ-কারের পর ঋ-কার থাকলে উভয়ে মিলে ‘অর’ হয় এবং তা রেফ রূপে পরবর্তী বর্ণের সাথে লেখা হয়। যেমন—
অ + ঋ = অর; দেব + ঋষি = দেবর্ষি।
আ + ঋ = অর মহা + ঋষি = মহর্ষি।
এরূপ — অধমর্ণ, উত্তমর্ণ, সপ্তর্ষি, রাজর্ষি ইত্যাদি।

৫.অ/আ+ঋ = ঋতঃ অ-কার কিংবা আ-কারের পর ‘ঋত’-শব্দ থাকলে (অ/আ+ঋ) উভয় মিলে ‘আর’ হয় এবং বানানে পূর্ববর্তী বর্ণে আ ও পরবর্তী বর্ণে রেফ লেখা হয়। যেমন—
অ + ঋ = আর; শীত + ঋত = শীতার্ত।
আ + ঋ = আর; তৃষ্ণা + ঋত = তৃষ্ণার্ত। এরূপ —ভয়ার্ত, ক্ষুধার্ত ইত্যাদি।

৬. অ/আ + এ/ঐ = ঐঃ অ-কার কিংবা আ-কারের পর এ-কার কিংবা ঐ-কার থাকলে উভয়ে মিলে ঐ-কার হয়; ঐ-কার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের সাথে যুক্ত হয়। যেমন—
অ + এ = ঐ; জন + এক = জনৈক। (২৯তম বিসিএস প্রিলিমিনারি)
আ + এ = ঐ; সদা + এব = সদৈব।
অ + ঐ = ঐ; মত + ঐক্য = মতৈক্য।
আ + ঐ = ঐ; মহা + ঐশ্বর্য = মহৈশ্বর্য। এরূপ- হিতৈষী, সর্বৈব, অতুলৈশ্বর্য ইত্যাদি।

৭. অ/আ + ও/ঔ = ঔঃ অ-কার কিংবা আ-কারের পর ও-কার কিংবা ঔ-কার থাকলে উভয়ে মিলে ঔ-কার হয়; ঔ-কার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের সাথে যুক্ত হয়। যেমন-
অ + ও = ঔ; বন + ওষধি = বনৌষধি।
আ + ও = ঔ; মহা + ওষধি = মহৌষধি।
অ + ঔ = ঔ; পরম + ঔষধ = পরমৌষধ।
আ + ঔ = ঔ মহা + ঔষধ = মহৌষধ।

৮. ই/ঈ+ই/ঈ=ঈঃ
ই-কার কিংবা ঈ-কারের পর ই-কার কিংবা ঈ-কার থাকলে উভয়ে মিলে দীর্ঘ ঈ-কার হয়। দীর্ঘ ঈ-কার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের সাথে যুক্ত হয়। যেমন-
অতি + ইত = অতীত,
পরি + ঈক্ষা = পরীক্ষা।
সতী + ইন্দ্র = সতীন্দ্র।
সতী + ঈশ = সতীশ। এরূপ- গিরীন্দ্র, ক্ষিতীশ, মহীন্দ্র, শ্রীশ, পৃথ্বীশ, অতীব, প্রতীক্ষা, প্রতীত, রবীন্দ্র, দিল্লীশ্বর ইত্যাদি।

৯. ই/ঈ + ই/ঈ ভিন্ন অন্য স্বর = য-ফলা ই-কার কিংবা ঈ-কারের পর ই ও ঈ ভিন্ন অন্য স্বর থাকলে ই বা ঈ স্থানে ‘য’ বা য-ফলা হয়। য-ফলা লেখার সময় পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের সাথে লেখা হয়। যেমন—
ই + অ = য-ফলা; অতি + অন্ত = অত্যন্ত।
ই + আ = য-ফলা আকার; ইতি + আদি = ইত্যাদি।
ই + উ = য-ফলা হ্রস্ব উ-কার; অতি + উক্তি = অত্যুক্তি।
ই+ ঊ = য-ফলা দীর্ঘ উ-কার; প্রতি + ঊষ = প্রত্যুষ।
ঈ + আ = য-ফলা আকার; মসী + আধার = মস্যাধার।
ই + এ = য-ফলা এ-কার; প্রতি + এক = প্রত্যেক।
ঈ + অ = য-ফলা; নদী + অম্বু = নদ্যম্বু। এরূপ-প্রত্যহ, অত্যধিক, গত্যন্তর, প্রত্যাশা, প্রত্যাবর্তন, আদ্যন্ত, যদ্যপি, অভ্যুত্থান, অত্যাশ্চর্য, প্রত্যুপকার ইত্যাদি।

১০. উ/ঊ + উ/ঊ = ঊ উ-কার কিংবা উ-কারের পর উ-কার কিংবা উ-কার থাকলে উভয়ে মিলে ঊ-কার হয়; ঊ-কার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জন ধ্বনির সাথে যুক্ত হয়। যেমন—
উ + উ = ঊ; মরু + উদ্যান = মরূদ্যান।
উ + ঊ = ঊ; বহু + ঊর্ধ্ব = বহূর্ধ্ব।
ঊ + উ = ঊ; বধূ + উৎসব = বধূৎসব।
ঊ + ঊ = ঊ;ভূ + ঊর্ধ্ব = ভূর্ধ্ব।

১১. উ/ঊ+ উ/ঊ ভিন্ন অন্যস্বর= ব-ফলাঃ উ-কার কিংবা ঊ-কারের পর উ-কার ও ঊ-কার ভিন্ন অন্য ঘর থাকলে উ বা উ স্থানে ব-ফলা হয় এবং লেখার সময় ব-ফলা পূর্ববর্তী বর্ণের সাথে লেখা হয়। যেমন
উ + অ = ব + অ; সু + অল্প = স্বল্প।
উ + আ = ব + আ; সু + আগত = স্বাগত।
উ + ই = ব + ই; অনু + ই = অন্বিত।
উ + ঈ = ব + ঈ; তনু + ঈ = তন্বী।
উ + এ = ব + এ; অনু + এষণ = অন্বেষণ। এরূপ- পশ্বধম, পশ্বাচার, অন্বয়, মন্বন্তর ইত্যাদি।

১২. ঋ-কারের পর ঋ ভিন্ন অন্য স্বর থাকলে ‘ঋ’ স্থানে ‘র’ হয় এবং তা র-ফলা রূপে পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনের সঙ্গে যুক্ত হয়। যেমন – পিতৃ + আলয় = পিত্রালয়, পিতৃ + আদেশ = পিত্রাদেশ।

১৩. এ, ঐ-কারের পর এ, ঐ স্থানে যথাক্রমে অয়, আয় হয়। যেমন-
এ + অ = অয়্‌ + অ; নে + অন = নয়ন। শে + অন = শয়ন।
ঐ + অ = আয়্‌ + অ; নৈ + অক = নায়ক। গৈ + অক = গায়ক।

১৪. ও, ঔ-কারের পর ও, ঔ স্থানে যথাক্রমে অব ও আব হয়। যেমন-
ও + অ = অব্‌ + অ; পাে + অন = পবন। লাে + অন = লবণ।
ঔ + অ = আব্‌ + অ; পৌ + অক = পাবক।
ও + আ = অব্‌ + আ; গাে + আদি = গবাদি।
ও + এ = অব্‌ + এ; গাে + এষণা = গবেষণা।
ও + ই = অব্‌ + ই; পাে + ই = পবিত্র।
ঔ + ই = আব্‌ + ই; নৌ + ইক = নাবিক।
ঔ + উ = আব্‌ + উ; ভৌ + উ = ভাবুক।


👉 Read More...👇

Add a Comment